খবর৭১ঃ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেই সংশ্লিষ্ট এলাকাকে লকডাউন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকে। পাশাপাশি করোনার উপসর্গ দেখা দিলেই হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই বৈঠক হয়। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মন্ত্রী জানান, মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেই কেবল সংশ্লিষ্ট এলাকা লকডাউন করা হত। এখন মৃত্যু পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে না। আক্রান্ত হলেই সেই এলাকা লকডাউন করা হবে।
একইসঙ্গে সাধারণ মানুষকে ঘরে রাখতে পুলিশকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তার অলোকেই সন্ধ্যা ৬টার পর সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে। এছাড়া ছোটোখাটো অপরাধের মধ্যে ছিচকে চুরি, টাকা আত্মসাৎ, প্রতারণার মতো অপরাধ রয়েছে।
এসব অপরাধে যারা অনেক দিন ধরে আটক রয়েছেন তাদের মুক্তি দেয়ার জন্য নীতিমালা করতে প্রধানমন্ত্রী স্বরাস্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে হত্যা, ধর্ষণ ও এসিড মামলার আসামিদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
এছাড়া মন্ত্রিসভা বৈঠকের অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) যেসব কারখানা মাস্ক ও পারসোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) তৈরি করে এমন কারখানাগুলো খোলা রেখে বাকিগুলো বন্ধ রাখারও নির্দেশনা এসেছে বলে জানা গেছে।
দীর্ঘদিন জেলখাটা আসামিদের মুক্তির নীতিমালা করার প্রসঙ্গে স্বরাস্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সোমবার রাতে বলেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সরকার চিন্তিত। কারাগারে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বিষয়েও সরকারকে চিন্তা করতে হচ্ছে। ছোটোখাটো অপরাধে যারা দীর্ঘদিন ধরে জেলে আছেন এবং হত্যা, ধর্ষণ ও এসিড মামলার আসামি নয় কিন্তু ইতিমধ্যে বহুদিন জেল খেটেছেন এমন কয়েদিদের কীভাবে মুক্তি দেয়া যায় সে বিষয়ে আমরা পর্যালোচনা করেছি। তারা দীর্ঘদিন ইতিমধ্যে সাজাও খেটেছেন। বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করেছিলাম। উনি শুনে বলেছেন, তাদের কিভাবে মুক্তি দেয়া যায়, কোন প্রক্রিয়ায় সেটাও আপনাদের খুঁজে বের করতে হবে। সে বিষয়ে একটি নীতিমালা করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই আলোচনার ভিত্তিতে আমরা কাজ করছি।’
এ ধরনের আসামির সংখ্যা কতজন হতে পারে-জানতে চাইলে স্বরাস্ট্রমন্ত্রী বলেন,‘৪ থেকে ৫ হাজারের মতো হবে। যারা ইতিমধ্যে দীর্ঘদিন সাজা খেটেছে। নীতিমালা প্রণয়ন হলে তার আলোকে এ ধরনের আসামিদের মুক্তি দেয়া হবে।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়ে মন্ত্রিসভায় নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা-জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে আক্রান্ত বেশি, সেখানে লকডাউন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আগেই সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন এবং একাধিক নির্দেশনাও দিয়েছেন।’