খবর৭১ঃ বিশ্ব জুড়ে শুরু হয়ে গেছে মন্দা। এবারের মন্দা ২০০৯-এর মন্দাকেও ছাড়িয়ে যাবে। স্থবির অর্থনীতিকে গতিশীল করার মাধ্যমে মন্দার সময় ও গভীরতাকে কমিয়ে আনতে কার্যক্রম শুরু করতে তাগিদ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
আইএমএফ-এর প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রভাবে বিশ্বের আর্থিক কর্মকাণ্ড হঠাত্ স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে শুরু হয়েছে মন্দা। এ মুহূর্তে উদীয়মান দেশগুলোর প্রয়োজন আড়াই ট্রিলিয়ন ডলার। কিন্তু এ পরিমাণও প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে তিনি মনে করেন। গত শুক্রবার অনলাইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
জর্জিয়েভা আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী বছর অর্থাত্ ২০২১ সালে বিশ্বমন্দা সামলে উঠতে পারে। কিন্তু এজন্য উদীয়মান দেশগুলোকে সহায়তার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে। তিনি বলেন, গত কয়েক সপ্তাহে উদীয়মান দেশের শেয়ারবাজার থেকে ৮৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি পুঁজি তুলে নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। বিশ্ব অর্থনীতির একটা মূল উদ্বেগ হলো দেউলিয়া অবস্থা এবং কর্মী ছাঁটাই, যা শুধু পুনরুদ্ধারকে বাধা দেবে তাই নয়, সমাজের কাঠামোকেও ক্ষয়িষ্ণু করে তুলবে। এই দেশগুলো ঋণের ভারে জর্জরিত। উন্নয়নশীল ৮০টিরও অধিক দেশ আইএমএফ থেকে জরুরি ভিত্তিতে অর্থ সাহায্য চেয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ কোভিড-১৯ এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য জরুরি সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। শুক্রবার বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রধানরা বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সরকার এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোকে বড়ো দায়িত্ব নিতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেছেন, ঋণ সংকটে থাকা দেশগুলো এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অনেক দেশের বাড়তি সহায়তা প্রয়োজন হবে। তিনি জানান, এরই মধ্যে ৬০টি দেশে জরুরি সহায়তার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিশ্বব্যাংক করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় এরই মধ্যে ১৪ বিলিয়ন ডলারের জরুরি তহবিল গঠন করেছে। এরই মধ্যে ২ বিলিয়ন ডলারের ২৫টি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এপ্রিল মাসে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ-এর বসন্তকালীন সভা এবার ভার্চুয়ালভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এ সভায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা দেওয়ার সমন্বিত পরিকল্পনা আসবে বলেও তিনি জানান। চীন হতে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের কারণে মাত্র তিন মাসেই পালটে গেছে পুরো বিশ্ব। বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরিভিত্তিতে আগ্রাসি পদক্ষেপ নিতে তাগিদ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ।