করোনা সংকট: আত্মহত্যা করলেন জার্মান মন্ত্রী

0
522
করোনা সংকট: আত্মহত্যা করলেন জার্মান মন্ত্রী

খবর৭১ঃ

করোনায় তৈরি অর্থনৈতিক সংকট কেড়ে নিল জার্মানির এক অর্থমন্ত্রীর প্রাণ। দেশটির হেসে প্রদেশের অর্থমন্ত্রী থমাস শেফারের ছিন্নভিন্ন মরদেহ মিলেছে রেললাইনের পাশে। ধারণা করা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের মহামারিতে বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে কী করে টেনে তুলবেন এই দুশ্চিন্তা কেড়ে নিয়েছে তার প্রাণ।খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

শনিবার ফ্রাঙ্কফুর্ট এবং মাইনজের মধ্যবর্তী হোচাইম শহরে হাইস্পিড ট্রেন লাইনের পাশ থেকে শেফারের ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার হয়। গোটা শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়ায় প্রথমে তাকে চেনা যাচ্ছিলো না। মনে করা হচ্ছে, চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়েই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত গোটা জার্মানি। জনজীবনে নেমেছে স্থবিরতা। সেই ধাক্কা এসে লেগেছে অর্থনীতিতে। ভেঙে পড়া অর্থনীতি কী করে টেনে তুলবেন? এই দুশ্চিন্তা ছিল থমাস শেফারের। সেই চাপ সামলাতে না পেরে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন ৫৫ বছর বয়সী এই রাজনীতিক।

সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ইদানীং জনসমক্ষেও সে ভাবে আসছিলেন না তিনি। অবসাদে ভুগছিলেন। দেশ আর্থিক সঙ্কট থেকে কীভাবে মুক্তি পাবে সেই অবসাদে শেফারের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন জার্মানির হেসে প্রদেশের প্রধান ভলকার বুফিয়ের।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার খবরে জানা গেছে, গত ১০ বছর হেসের অর্থমন্ত্রী ছিলেন শেফার। করোনা আক্রমণের পরে কী ভাবে অর্থনৈতিক মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে খুবই চিন্তিত ছিলেন তিনি। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরে তিনি সবসময়ে এনিয়ে কাজ করছিলেন বলেও জানিয়েছেন বুফিয়ের। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে তার মতো একজনকে খুব দরকার ছিল আমাদের।’

বুফিয়ার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা হতবাক, আমরা অবিশ্বাসের মধ্যে রয়েছি এবং সর্বোপরি আমরা চরম দু:খিত।’

ইউরোপের দেশ জার্মানিতে করোনাভাইরাস বিধ্বংসী রূপে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশটিতে এরই মধ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫৮ হাজার ২৪৭ জনে গিয়ে ঠেকেছে। মৃত্যু হয়েছে ৪৫৫ জনের।

শেফারের বাড়ি জার্মানির অর্থনৈতিক রাজধানী ফ্র্যাঙ্কফুর্টে। যেখানে ডয়চে ব্যাংক এবং কমার্স ব্যাংকের মতো প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলির সদর দপ্তর রয়েছে। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকও ফ্রাঙ্কফুর্টে।

দীর্ঘ দু’দশক হেসে প্রদেশের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শেফার। চ্যান্সেলর অ্যাজেলা মের্কেলের সেন্টার রাইট ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটস (সিডিইউ)-এর সদস্য ছিলেন তিনি।

চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বুফিয়ার বলেন, ‘শ্যাফার ১০ বছর ধরে হেসি রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কাজ করছিলেন। মহামারি করোনায় ভেঙে পড়া অর্থনীতিকে কিভাবে পুনরায় দাঁড় করানো যায় সেটা নিয়ে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছিলেন তিনি। আজ আমাদের ধরে নিতে হবে যে তিনি গভীর চিন্তিত ছিলেন।’

জনপ্রিয় এবং সম্মানিত শ্যাফার দীর্ঘদিন ধরে বুফিয়ারের সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি স্ত্রী এবং দুই সন্তান রেখে গেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here