খবর৭১ঃ
আব্দুল আওয়ালঃ একদিকে হাওরের বোরো ফসল ঘরে তোলা নিয়ে সংশয়, অন্যদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ।এইদুই নিয়ে দুশ্চিন্তায় আর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন মদন উপজেলার হাওরাঞ্চলের কয়েক হাজার কৃষক পরিবার।এক ফসলী বোরো ধান কেটেগোলায় উঠাতে পারবে কিনা
এ নিয়ে অনিশ্চিয়তায়ভুগছেন তারা। কৃষকের কঠোর পরিশ্রম আর শ্রমের ঘামের একমাত্র ফসল এখনো হাওরে। এরই মধ্যে কৃষকের কষ্টার্জিত সোনালী বোরো ফসল শীষ শেষে ধানে রূপান্তরিত হয়েছে।চৈত্র মাসের শেষের দিকেই ধানকাটা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে বলে একাধিক কৃষকরা জানান। হয়ত অল্প কয়দিনের মধ্যেই সোনালী ফসল কৃষকের ঘরেওঠার কথা রয়েছে।কিন্তু সেই ফসল ঘরে তোলা নিয়ে সংশয় আর সাম্প্রতিক সময়ের করোনাভাইরাস নিয়ে দুশ্চিন্তায় আর আতঙ্ক যেন কাটছেই না হাওরাঞ্চলের কৃষকদের। হাওরাঞ্চলের একাধিক কৃষক জানান, বিগত বছর গুলোতে অকাল বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে হাওরের বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে যাওয়া ধানের মূল্য কম থাকার কথা মনে করেই আমরা অনেকটা দুশ্চিন্তায় আছি।অন্যদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়েএ বছর ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাবে না।এছাড়াআমরা নিজেরাও সংঘবদ্ধ ভাবে ধান কাটতে পারবনা করোনা আতঙ্কে।ফলে হাওরের ধান কিভাবেঘরে উঠবে এ নিয়ে আমাদের চিন্তার শেষ নেই।
উপজেলার কৃষক অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার বোরো আবাদ করা হয়েছে ১৭ হাজার ২৫০ হেক্টর । উপজেলা তলার হাওরের কৃষক মহন মিয়া, আল্লাদ মিয়া, আহম্মদ জানান, করোনা আতঙ্কের কারণে এবছর ধান কাটার শ্রমিক পাবো না।যারা নিয়মিত ধান কেটে দিত এবার তারা আসবে না।এক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ যদি শুরুতেই পর্যাপ্ত ধান কাটারমেশিন সরবরাহ করে রাখে তাহলে শ্রমিক সংকট কিছুটা দূর হবে। উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের কৃষক খসরু রুমান, তিয়শ্রী ইউনিয়নের কৃষক শাহাজাহান ওমাঘান ইউনিয়নের কৃষক দুলাল মিয়া বলেন, ঘরেধান তোলার আগ পর্যন্ত আমাদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই।কিন্তু এবার করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে হাওরের কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।ফলে শ্রমিক পাবো না।সবার মনে রয়েছে আতঙ্ক।এই আতঙ্ক চলমান থাকলে আমাদের ফসল ঘরে তোলা কঠিন হয়ে পড়বে।
মদন দক্ষিণপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন, বাঘমারা গ্রামের হছর উদ্দিন, হাসনপুর গ্রামের কালা মিয়া জানান, আমরা বর্তমানে বসে আছি।করোনার ভয়ে বাড়ি থেকে বের হই না।কিভাবেপরিবার চলবে তাওভেবে পাই না। আমরা তো রতের উপর লক্ষ্মী।আমরা মূলত বৈশাখ মাসেরদিকে তাকিয়া থাকি।ধান কাটবো।বছরের ৮/৯মাসের রোজগার করবো।এবার মনে হয় ধানেইকাটতেপারবো না পরিবার পরিজন নিয়ে কিভাবে চলব? কৃষি অফিসার মো. নাজমূলহাসান বলেন, বোরোধান কাটতে আরো বেশ কয়েক দিন বাকি রয়েছে।আমরা আশা করছি এর আগেই করোনাভাইরাস থেকে দেশ রক্ষা পাবে।আর যদি এভাবেই থাকে তাহলে শ্রমিকরা নিদিষ্ট দূরত্ব বজায়ে রেখে ধানকাটতে হবে।
আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ৫০ পার্সেন্ট পরিশোধের মাধ্যমে ধান কাটার মেশিন দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।আমি মনে করি এতে ধানকাটার শ্রমিকের সমস্যা হবে না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ওয়ালীউল হাসান বলেন, কৃষকদের ধান ঘরে তোলার স্বার্থেই সরকার ধান কাটার মেশিনের ব্যবস্থা করছে ধান কাটার সময় আরো কিছু দিন রয়েছে। অচিরেই করোনাভাইরাস থেকে এ দেশ রক্ষা পাবে। তাই শ্রমিক সংকট হবে না বলে আমি মনে করি।