খবর৭১ঃ
বয়স ও মানবিক বিবেচনায় শর্ত সাপেক্ষে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ছয় মাসের জন্য মুক্তি পাচ্ছেন আজ। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানের বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে খালেদা জিয়া ঢাকায় নিজ বাসায় থেকে চিকিত্সা গ্রহণ করবেন। দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। সরকার মানবিক কারণে সদয় হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা (উপধারা-১) অনুযায়ী মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সুপারিশ পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যখন তাকে মুক্তি দেবে, তখন থেকেই তা কার্যকর হবে।
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহীদুজ্জামান জানিয়েছেন, ‘খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সুপারিশ করার পর এখন আইনি প্রক্রিয়াগুলো শেষ হলেই মুক্তি পাবেন। এরই মধ্যে আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তির ফাইল হাতে পেয়েছি। এখন আমরা এ বিষয়ে একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করেছি। এটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করব। মন্ত্রীর অনুমোদনের পর সেই ফাইল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদনের পর তাকে মুক্তির জন্য ব্যবস্থা নিতে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। এর পরই তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।’ তিনি বলেন, তবে আইনি প্রক্রিয়াগুলো আজ বুধবার দুপুরের মধ্যে শেষ হতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা তো আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পেয়েই গেলাম, এখন প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদন বাকি আছে।’ এদিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মুক্তির বিষয়টি কারারক্ষীদের মাধ্যমে বেগম জিয়াকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। মুক্তির ঘোষণা শোনার পর থেকে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল হাসপাতাল এলাকায় নেতাকর্মীদের ভিড় বেড়ে যায়।
এদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে তাকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কিছুদিন আগে খালেদা জিয়ার ভাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি দরখাস্ত এবং আমার কাছে একটি দরখাস্ত করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়ার জন্য। সেখানে তিনি লন্ডনে উন্নত চিকিত্সা করানোর কথা বলেছিলেন। এরপর খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার, বোন সেলিমা ইসলাম, বোনের স্বামী রফিকুল ইসলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একই বিষয়ে সাক্ষাত্ করেছিলেন। সেখানেও এই আবেদনের ব্যাপারে তারা কথা বলেছিলেন। তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলেছিলেন নির্বাহী আদেশে তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য।’ তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না, এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আগে ছয় মাস যাক, তারপর দেখা যাবে।