খবর৭১ঃ করোনাভাইরাসের ‘দুটো প্রজাতি’ বা স্ট্রেইন দুনিয়াব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে এবং তাণ্ডব ঘটাচ্ছে। বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সিয়াওলু তাং এবং তার সহ-গবেষকরা করোনা আক্রান্ত ১০০টি রোগীকে বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এ কথা বলেছেন।
এ গবেষক দলটি দেখতে পেয়েছেন ২৯তম রোগী এস-টাইপ এবং ৭২তম রোগী এল-টাইপ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
গবেষক দলটি ধারণা করছেন, এল-টাইপ ভাইরাস এসেছে তুলনামূল ভাবে পুরানো এস-টাইপ থেকে।
পশু থেকে মানব দেহে যখন এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে তখন এস-টাইপের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে এরপরই উদ্ভব ঘটে এল-টাইপের। এই দুই প্রজাতিই বিশ্বব্যাপী মহামারি সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত।
ন্যাশনাল সায়েন্স রিভিউতে প্রকাশিত নিবন্ধে আরও বলা হয়েছে, এস-টাইপের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে এল-টাইপ করোনাভাইরাস অনেক বেশি আগ্রাসী।
এই দুটোই পুরোপুরি আলাদা প্রজাতির ভাইরাস বলেই আপাতত মনে করা হচ্ছে। অবশ্য এদের মধ্যে কি ধরনের জেনেটিক পরিবর্তন ঘটেছে এবং কি কারণে এটি আগ্রাসী হয়ে উঠেছে তা এখনও বিজ্ঞানীরা বুঝে উঠতে পারেননি। এ কথা বলেন, অক্সফোর্ড ব্রুকস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রবীন্দ্র কানাদা।এদিকে, রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক আয়ান জোন্স বলেন, চিহ্নিত এই দুই প্রজাতির মধ্যে পার্থক্য খুবই কম।
এদেরকে দুটো আলাদা প্রজাতি ভাবাও ঠিক নয়। এছাড়া জেনেটিক গঠনে অনেকটা পার্থক্য হলেও তাতে আমিষ বা প্রোটিন উৎপাদনের ক্ষেত্রে তেমন কোনো হেরফের হয় না। ফলে ভাইরাসের কর্ম-তৎপরতা বা রোগের উপসর্গের ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য হওয়ার কথা নয়। সব মিলিয়ে এক প্রজাতির চেয়ে অন্যটা অধিকতর প্রাণঘাতী হতে পারে না বলেই জোন্স প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
তার বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাং এবং তার সহ-গবেষকদের সমীক্ষাকে কেন্দ্র করে ‘হু’ বলছে, করোনাভাইরাসের পরিবর্তন ঘটছে এমন কোনো আলামত এখনও পাওয়া যায়নি। তাং এবং তার সহ-গবেষকদের সমীক্ষার ভিত্তিতে মনে হচ্ছে যে ভাইরাসের কিছু জেনেটিক পরিবর্তন ঘটছে। তার মানে এই নয় যে ভাইরাস পুরোপুরি বদলে যাচ্ছে।
আজ শনিবার প্রকাশিত ১৪ মার্চের বিজ্ঞান সাময়িকী নিউ সায়েন্টিসকে এ কথা বলেন ‘হু’ এক প্রতিনিধি। এছাড়া ভাইরাসে ক্ষেত্র সব সময়ই মিউটেশন বা পরিব্যাপ্তি চলছে। বিশেষ করে কোভিড-১৯’এর মতো আরএনএ ভাইরাসে এটি ঘটছে নিয়মিত। এ ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হলে এটি রোগীর শ্বাসতন্ত্রে বংশ বিস্তার করতে থাকে। প্রতিবার বংশ বিস্তার করার সময়ে অন্তত অর্ধ ডজন মিউটেশন ঘটে বলে জানান আয়ান জোন্স।