খবর৭১ঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় সংশোধনসহ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) ৮ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদন হয়। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্পগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি জানান, একনেক সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্পের সংশোধনীসহ ৮ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি নতুন এবং দুইটি সংশোধিত প্রকল্প। সবমিলিয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৪৬৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ৭ হাজার ৪৬ কোটি টাকা বাড়িয়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকায় সংশোধন করা হয়েছে। ব্যয় বাড়ানোর বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, জাপানের উন্নয়ন সংস্থা (জাইকা) নতুন করে প্রকল্প পর্যালোচনা করে দেখেছে, ব্যয় বাড়বে। এ কারণেই ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। রেলসেতু নির্মাণে যে ৭ হাজার ৪৬ কোটি টাকা বাড়তি ব্যয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে তার মধ্যে ৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে জাইকা।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে প্রকল্পটি যখন একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়, তখন এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। তখন জাইকার ঋণ ছিল ৭ হাজার ৭২৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ২০২৩ সালে প্রকল্পটি শেষ করার লক্ষ্য থাকলেও এটি আরো দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সভায় জানানো হয়েছে, নির্মাণকাজের ব্যয় বৃদ্ধি, ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি ও অন্যান্য ফ্যাসিলিটিজ, সিগন্যালিং ও টেলিকমিউনিকেশন ওয়ার্কসসহ বিভিন্ন খাতে খরচ বাড়বে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এটি ডুয়েল লাইন রেলসেতু হবে। বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে ৩০০ মিটার উজানে এই সেতু নির্মাণ করা হবে। সেতুটি দিয়ে সিরাজগঞ্জসহ উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে ট্রেন চলাচল করবে।
সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো—৭২৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে জরুরি পানি সরবরাহ প্রকল্প, ৭৮৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে আমিনবাজার ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ প্রকল্প, ২৬৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখপাড়া (ঝিনাইদহ)-শৈলকুপা-লাঙ্গলবাঁধা (শ্রীপুর)-ওয়াপদামোড় (মাগুড়া) জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতকরণ প্রকল্প, ৪০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী বিসিক শিল্পনগরী-২ প্রকল্প (১ম সংশোধিত), ৪৩৩ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার মুন্সীগঞ্জ খানপুরা এবং কাজিরহাট হতে রাজধরদিয়া পর্যন্ত যমুনা নদীর ডানতীর সংরক্ষণ প্রকল্প, ৫৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণসহ বাম ও ডানতীর সংরক্ষণ প্রকল্প এবং ৫৬৬ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মা নদীর ভাঙন হতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ও শাজাহানপুর এলাকা রক্ষা প্রকল্প।