রাণীশংকৈলের তৈয়ব আলী হত্যার রহস্য উন্মোচন; আটক- ৫ !

0
609
রাণীশংকৈলের তৈয়ব আলী হত্যার রহস্য উন্মোচন; আটক- ৫ !

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার গোগরে গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে ঘটে যাওয়া গরু ব্যবসায়ী তৈয়ব আলী হত্যা মামলার রহস্য উম্মোচন করে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে রানীশংকৈল থানা পুলিশ।

২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাণীশংকৈল থানায় পীরগঞ্জ ও রাীণশংকৈলের দায়িত্বে থাকা সহকারী পুলিশ সুপার তৌহি- উদ- দৌলা লুপম প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন তৈয়ব হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রাণীশংকৈল থানার ওসি (তদন্ত) খায়রুল আনাম ডন, এ এস আই আহসান হাবীব, ভিকটিম মৃত তৈয়ব আলীর স্ত্রী ছবি আকতার, তাঁর সন্তানেরা ও সাংবাদিকবৃন্দ।

প্রেস ব্রিফিং মতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া তৈয়ব আলী হত্যার সাথে জড়িত গোগর গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে রবিউল ইসলাম (২৩), একই গ্রামের মুসলিম উদ্দিনের ছেলে সাব্বির (২০), খলিলুর রহমানের ছেলে সাগর আলী (১৯) , মোস্তফা আলমের ছেলে জুয়েল রানা( ১৬), এবং মতিউর রহমান মতির ছেলে শাহনেওয়াজ (১৯) কে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে হত্যার আলামত সহ পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

আসামীদের ব্যপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদের সম্পৃক্ততা ও হত্যাকান্ডের সত্যতা স্বীকার করে। পরে ৫ জন আসামীই বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্য়বিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

আদালতের প্রদত্ত স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিতে আসামীরা বলেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি শনিবার ভিকটিম মৃত তৈয়ব আলী( ৪০) গরু ক্রয় বিক্রয়ের জন্য উপজেলার কাতিহার হাট যায়। হাটে গরু ক্রয় বিক্রয় করে ঐদিনই বিকালে গোগর চৌরাস্তা বাজারে অপর ১টি গরু নগদ ৫০ হাজার টাকা দরে বিক্রি করে। আসামীরা ভিকটিম মৃত তৈয়ব আলীর কাছে গরু বিক্রয়ের মোট ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আছে বলে জানতে পারে।

মাগরিবের নামাজের পর চৌরাস্তা দরমিয়ানের মিলের চাতালে উক্ত টাকা ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে, রাত্রি আনুমানিক ১১টায় গোগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম কাঁচা রাস্তার বাঁশঝাড়ে সকলে মিলিত হয়, পরে ৩ জন আসামী হত্যাকান্ডের স্থান পিছলাপুকুর এলাকায় আগেই চলে যায়।
২ জন আসামী ভিকটিম মৃত তৈয়ব আলীকে কৌশলে সেখানে বাঁশঝাড়ের গম ক্ষেতের কাছে নিয়ে গিয়ে আটক করে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বের করতে বলে। ভিকটিম তার টাকা গোগর বাজারে এক দোকানদারের কাছে রেখে এসেছে বললে, আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
এসময় তৈয়ব বলে, তোমরা আমার এলাকার ছেলে হয়ে এরকম করছো আমি তোমাদের অভিভাবক ও লোকজনকে বলে দিবো এবং মামলা করবো।

এ কথা শুনামাত্রই আসামীরা তৈয়ব আলীর মাথার পিছনে, বুকের মাঝখানে, বাম চোখের কোনে, উপুর্যপরি অস্ত্রদিয়ে আঘাত করে তৈয়ব আলীকে হত্যা করে। পরে মৃতদেহ টেনে নিয়ে দরিমানের পতিত জমির উত্তর পূর্ব কোনে গর্ত করে লাশ পুতে দেয় এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র পিছলাপুকুরে ফেলে দেয়। এসময় মৃত তৈয়ব আলীর কাছে আসামীরা নগদ ৭ হাজার টাকা পায় এবং সে টাকা তাঁরা সকলে ভাগ করে নেয় ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি আসামী রবিউল নিয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত মৃত তৈয়ব আলীর স্ত্রী ছবি আকতার বলেন, আমার এলাকাতেই আসামীদের বাড়ি আমার চোখের সামনে ওদের দেখে আমি বেঁচে থাকতে পারবো না, তাই আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যাকারী আসামীদের আমি সর্বোচ্চ শাস্তি (মৃত্যুদন্ড) চাই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here