খবর৭১ঃ সংসদ কার্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে সরকার নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। দেশে বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় প্রণোদনাও দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে শতভাগ বিদেশি মালিকানা সুবিধা; ৭০ শতভাগ মূলধন ও মুনাফা প্রত্যাবাসন সুবিধা। সেইসঙ্গে নির্দিষ্ট খাতে রপ্তানির ওপর ক্যাশ ইনসেনটিভ; এলাকা ও খাত ভেদে ৫-১০ বছরের ট্যাক্স হলিডে; দ্বৈত কর রেয়াত চুক্তির আওতায় কর রেয়াত সুবিধা; শতভাগ রপ্তানিমুখি শিল্পে শূন্য শুল্ক হারে যন্ত্রপাতি আমদানি ও বন্ড সুবিধায় কাঁচামাল আমদানির সুবিধা; রয়্যালটি, ফ্রাঞ্চাইজি, কারিগরি সহায়তা ও কারিগরি জ্ঞান ফি প্রত্যাবাসন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে রংপর-১ আসনের সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার লিখিত প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী এ সব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নিবন্ধনের তুলনায় প্রকৃত বৈদেশিক বিনিয়োগ বছরভেদে কম বা বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে নিবন্ধনের সময় আবেদনকারী শিল্প প্রকল্পসমূহের শিল্প কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী বিনিয়োগ প্রস্তাব করা হয়।
এ শিল্প কর্মপরিকল্পনা সময়ের পরিক্রমায় বাস্তবায়িত করা হয়। নতুন বিনিয়োগ প্রস্তাবের পাশাপাশি পুরনো প্রকল্পের বিনিয়োগও অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ আছে।
তিনি জানান, বিগত ৫ বছরের বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তপক্ষে নিবন্ধিত প্রস্তাবিত বিনিয়োগ (১০০% বিদেশি এবং যৌথ উদ্যোগ) এবং বাংলাদেশে প্রাপ্ত প্রকৃত বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য হলো ২০১৪ সালে নিবন্ধিত প্রকল্পসমূহের প্রস্তাবিত ৯৩৬.৯৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাবের বিপরীতে প্রকৃত বিনিয়োগ হয়েছিল ১ হাজার ৫৫১.২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; ২০১৫ সালে নিবন্ধিত প্রকল্পসমূহের প্রস্তাবিত ৫৬২.৩০৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাবের বিপরীতে প্রকৃত বিনিয়ােগ হয়েছিল ২ হাজার ২৩৫.৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালে নিবন্ধিত প্রকল্পসমূহের প্রস্তাবিত ১১ হাজার ৩২১.০৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাবের বিপরীতে প্রকৃত বিনিয়োগ হয়েছিল ২ হাজার ৩৩২.৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; ২০১৭ সালে নিবন্ধিত প্রকল্পসমূহের প্রস্তাবিত ১০ হাজার ৪৬৯.৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাবের বিপরীতে প্রকৃত বিনিয়োগ হয়েছিল ২ হাজার ১৫১.৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; ২০১৮ সালে নিবন্ধিত প্রকল্পসমূহের প্রস্তাবিত ৫ হাজার ১৬৬.৮২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাবের বিপরীতে প্রকৃত বিনিয়োগ হয়েছিল ৩ হাজার ৬১৩.৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। নিবন্ধিত প্রকল্পসমূহের গত ৫ বছরে প্রস্তাবিত এবং প্রকৃত বিনিয়োগের এই তুলনামূলক চিত্র হতে এটা বলা সমীচীন হবে না যে নিবন্ধনের তুলনায় প্রকৃত বিনিয়োগ অনেক কম।
বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে সরকারের পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, বিনিয়োগের জন্য বেসরকারি খাতকে সর্বোচ্চ ভূমিকার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এবং ৪টি রিজার্ভ খাত ব্যতীত সকল খাতকে বেসরকারি বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, বিনিয়োগকারীদের বিবিধ সেবা প্রদানের জন্য বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করেছে। এই আইনের আওতায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তপক্ষে সম্পূর্ণ ইন্টারনেট ভিত্তিক অনলাইন ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ও এসএস) প্লাটফর্ম চালু করা হয়েছে।