খনর৭১ঃ মাঘের পড়ন্ত বেলার উষ্ণতার ছুঁয়েছে বইমেলাকেও। ঘুরেফিরে কিংবা শুধু পাতা ওল্টানো ছাড়াও প্রতিদিনই বাড়ছে ক্রেতার সংখ্যা। ফলে স্টলে স্টলে ব্যস্ত বিক্রয়কর্মীরা। লেখক-প্রকাশকদেরও সেই উষ্ণতা ছুঁয়েছে।
বুধবার মেলায় অসংখ্য বইপ্রেমীদের দেখা যায়, যারা পছন্দের বই কিনে বাড়ি ফিরছেন। কেউবা আরও কয়েকটি বই কেনার জন্য স্টলে স্টলে ঘুরছেন।
দুইটি ব্যাগ হাতে আর কোলে তিনটি বই জড়িয়ে যাচ্ছেন অনিমা রায়। চোখে বই কেনার আনন্দ। অনিমা রাযয় বলেন, ‘এতদিন অনেক নতুন বই বের না হাওয়ায় ফিরে ফিরে গেছি। আজকে সেই কাঙ্খিত বইয়ের নাগাল পেলাম। আবার কবে আসি ঠিক নেই। তাই কিনে নিয়ে যাচ্ছি। অনেক আনন্দ হচ্ছে। সারা বছর ধরে অপেক্ষা ছিল এই বইগুলোর।’
তিনটি নতুন বই কিনেছেন দিপু আহমেদ। ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বরাবরই নতুন বইয়ের প্রতি আগ্রহ থাকে। শুধু নতুন বইয়ের জন্যই সেই উত্তরা থেকে এলাম।’
এদিকে, মেলার মাঝামাঝি সময়ে এসে ক্রেতার সংখ্যা আশানুরূপভাবে বেড়ে যাওয়ায় সন্তুষ্ট প্রকাশকেরা।
ইত্যাদি প্রকাশনীর প্রকাশক আদিত্য অন্তর ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘প্রতিদিনই ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে এটা বেশ ভালো দিক। যারাই আসছেন কেউ-না-কেউ একটি বই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।’
ঝিঙেফুল প্রকাশনীর প্রকাশক গিয়াস উদ্দিন খান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আশানুরূপ ক্রেতা পাচ্ছি। ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ভালো কিছু আশা করা যায়।’
বইমেলায় জমে উঠেছে নাট্য উৎসব
বইমেলায় গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান আয়োজিত একুশে পথনাট্য উৎসব জমে উঠেছে। বইমেলায় এ উৎসব বাড়তি আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে উন্মুক্ত মঞ্চে প্রতিদিন বিকাল পাঁচটা থেকে শুরু হয় এ পথনাটক উৎসব। ফেডারেশানের সদস্য দল থেকে নির্বাচিত দলসমূহ এখানে নাটক মঞ্চস্থ করছে। বই কেনার পাশাপাশি আগ্রহীরা নাটক দেখে সময় কাটাচ্ছেন।
নতুন বই
বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার মেলায় নতুন বই এসেছে ১৫৪টি। উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে বাংলা একাডেমি থেকে অনুপম হায়াৎ এর লেখা বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বই ‘বঙ্গবন্ধু ও চলচ্চিত্র’, বাংলানামা থেকে ড. মুহাম্মদ মোজাম্মেল হকের মুক্তিযুদ্ধ ও আলোচিত্র বিষয়ক ‘মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র অবিনাশী দলিল’, শিশু গ্রন্থকুটির থেকে ঝর্না দাশ পুরকায়স্থ’র শিশুতোষ বই ‘দীন দয়ালের হঠাৎ ম্যাজিক’, ইতি প্রকাশ থেকে ফরিদুর রেজা সাগরের গল্প ‘বল্টু ভূতের গল্প’, অনন্যা থেকে রকিব হাসানের গোয়েন্দা কাহিনি ‘হান্টিং লজের রহস্য’, পাঞ্জেরী থেকে পলাশ মাহবুবের ছড়ার বই ‘কুক্কুরু কু’, অন্যধারা থেকে হাবীবুল্লাহ সিরাজীর কবিতার বই ‘নোনা জলে বুনো সংসার’।
মূল মঞ্চ
গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় অনুপম হায়াৎ রচিত বঙ্গবন্ধু ও চলচ্চিত্র শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাজেদুল আউয়াল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মোরশেদুল ইসলাম ও মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক। লেখকের বক্তব্য প্রদান করেন অনুপম হায়াৎ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাসির উদ্দীন ইউসুফ।
কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি জরিনা আখতার, সাজ্জাদ শরিফ, জাহিদ মুস্তাফা এবং নওশাদ জামিল। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ফয়জুল্লাহ সাঈদ, মাহমুদুল হাকিম তানভীর এবং আদিবা ইসমাত। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌস আরা, বশিরুজ্জামান সাব্বির, নবীন কিশোর, প্রিয়াংকা বিশ্বাস এবং অনন্যা আচার্য্য। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন কাজী ইমতিয়াজ সুলতান (তবলা), রিচার্ড কিশোর (গীটার), মো. শফিউজ্জামান (কী-বোর্ড), মো. আমির হোসেন (অক্টোপ্যাড)।
লেখক বলছি
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন মারুফ রায়হান, জয়দীপ দে, অরুণ কুমার বিশ্বাস এবং শিমুল সালাহ্উদ্দিন।