খবর৭১ঃ চীনে মহামারি আকার ধারন করা করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থাকলেও বাংলাদেশে এ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই বলে জানিয়েছে সরকারের জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।
সোমবার আইইডিসিআর সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
আইইডিসিআর এর পরিচালক বলেন, গত ২১ জানুয়ারি থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৬ হাজার ৫২২ জনের স্ক্রিনিং করা হয়েছে। তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। আর আইইডিসিআরের হটলাইনে কল এসেছে ১২০টি। এর মধ্যে ৮৪টি কল করোনাভাইরাস সম্পর্কিত। এছাড়া নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৫ জনের। তবে কারও মধ্যে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। তাই বলা যায়, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নেই।
গত বছরের শেষ দিন চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়টি ধরা পড়ে। ছয় সপ্তাহ আগে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটি ইতোমধ্যে নয় শতাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজারের মতো। মৃত ও আক্রান্তদের সংখ্যাগরিষ্ঠই উহান ও এর আশপাশের এলাকার, বেইজিং থেকে যা প্রায় হাজার কিলোমিটার দূরে।
করোনাভাইরাস চীনের যে নগরী থেকে ছড়িয়েছিল সেই উহান থেকে গত ১ ফেব্রুয়ারি ৩১২ বাংলাদেশিকে নিয়ে দেশে আসে বিমানের একটি উড়োজাহাজ। দেশে এ পর্যন্ত যাদের আনা হয়েছে তাদের কারও শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। তবে গতকাল চীনে থাকা এক বাংলাদেশির শরীরে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর আসে।
আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, সিঙ্গাপুরে একজন বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে বাংলাদেশের হাইকমিশন জানিয়েছে। ওই শ্রমিক সেখানে দেড় বছর ধরে কাজ করছেন। অন্য অসুস্থতার কারণে তিনি হাসপাতালে যাওয়ার পর পরীক্ষাতে তার শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। যেহেতু বাইরের দেশে রোগীর গোপনীয়তা খুব কঠিনভাবে মেনে চলা হয়, তাই তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।
গৃহপালিত প্রাণীর মধ্যে নভেল করোনাভাইরাস থাকতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, ঘরের পোষা প্রাণী নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয় এমন কোনো প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
আশকোনা হজ ক্যাম্প এবং সম্মিলিতি সামরিক হাসপাতালে কোয়ারাইন্টাইনে থাকা উহানফেরতদের বিষয়ে সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, তারা ১ ফেব্রুয়ারি এসেছেন। ১৪ দিনের ‘ইনকিউবিশন পিরিয়ড’ হিসেবে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। ১৬ ফেব্রুয়ারি তারা বাড়ি ফিরবেন বলে প্রাথমিকভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরপরও যদি তারা কোনও অসুবিধা বোধ করেন তাহলে তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।