বিশ্ব মহামারিতে রূপ নিতে পারে করোনাভাইরাস!

0
465
বিশ্ব মহামারিতে রূপ নিতে পারে করোনাভাইরাস!

খবর৭১ঃ প্রায় এক মাস আগে চীনে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে ২০টির বেশি দেশে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ আরও কতটা ব্যাপকভাবে ছড়াতে পারে এবং কত মানুষ এতে আক্রান্ত হতে পারে তা নিয়ে চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা।

এখনো এটিকে বিশ্ব মহামারি বলে ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু বিশ্বকে এই করোনাভাইরাসের এক মহামারির মুখোমুখি হতে হবে- এমন আশঙ্কায় কর্মকর্তারা এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।

মহামারি কী?

একই সময়ে যখন বিশ্বজুড়ে বহু দেশের মানুষ কোনো সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন, তখন একে বিশ্ব মহামারি বলে বর্ণনা করা হয়। এর সাম্প্রতিক একটি উদাহারণ হচ্ছে ২০০৯ সালের সোয়াইন ফ্লু। বিশেষজ্ঞদের ধারণা ওই বিশ্ব মহামারিতে শত শত মানুষ মারা গেছে।

নতুন কোনো ভাইরাস, মানুষ সহজেই যেটির সংক্রমণের শিকার হয় এবং যা মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়, সেটি বিশ্ব মহামারিতে রূপ নেয়ার আশঙ্কা বেশি। করোনাভাইরাসের বেলায় এই সবগুলো বৈশিষ্ট্যই দেখা যাচ্ছে।

যেহেতু এখনো পর্যন্ত এর কোনো প্রতিষেধক টিকা বা চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি, এটির বিস্তার বন্ধ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কখন বিশ্ব মহামারী ঘোষণা করা হয়

কোনো সংক্রমণকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডাব্লিউএইচও কখন বিশ্ব মহামারি ঘোষণা করবে, তার আগে কিছু ধাপ আছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেভাবে ছড়িয়েছে, তাতে এটি এখন বিশ্ব মহামারি ঘোষণার মাত্র এক ধাপ নিচে আছে।

করোনাভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে এবং চীনের আশেপাশের দেশ তো বটেই, বহু দূরের দেশেও ছড়িয়েছে। যদি বিশ্বের নানা অঞ্চলে বহু মানুষের মধ্যে এটির বিস্তার অব্যাহত থাকে, তাহলে এটিকে তখন ‘বিশ্ব মহামারি’ ঘোষণা করতে হবে।

সেই আশঙ্কা কতটা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কতটা মারাত্মক এবং এটি কত দূর পর্যন্ত ছড়াতে পারে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস অ্যাডহ্যানম জেব্রেইয়েসাস বলেছেন, চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং বিস্তার এখনো বেশ ধীরগতিতে ঘটছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৭ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৩৬০ জনের মতো। এদের বেশিরভাগই চীনে।

চীনের বাইরে দেড়শোর বেশি সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মারা গেছে মাত্র একজন, ফিলিপিনে।

ড. জেব্রেইয়েসাস বলেছেন, যদি এই সংক্রমণ যেখান থেকে ছড়িয়েছে সেখানেই এটির মোকাবেলা করা যায়, তাহলে অন্য দেশে এটি খুব কমই ছড়াবে বা ছড়ালেও সেটি হবে খুবই ধীরগতিতে।

প্রতিটি মহামারির চরিত্র আলাদা। কাজেই একটা ভাইরাস ছড়িয়ে না যাওয়া পর্যন্ত এর পুরো প্রভাব অনুমান করা কঠিন।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, করোনাভাইরাস হয়তো সাম্প্রতিককালে ছড়িয়ে পড়া অন্য কিছু রোগ, যেমন সার্সের মতো অতটা মারাত্মক নয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এরপরও করোনাভাইরাস নিয়ে ‘পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি অব ইন্টারন্যাশনাল কনসার্ন’ ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ এই ভাইরাস নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো ব্যাপার আছে এবং সেজন্যে তারা জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করছে।

তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একথাও বলছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে যদিও প্রতিটি দেশের ব্যবস্থা নেয়া উচিত, কিন্তু আন্তর্জাতিক ভ্রমণ বা বাণিজ্যে অপ্রয়োজনীয় বিঘ্ন ঘটায়, তেমন ব্যবস্থা নেয়ার সময় এখনো হয়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here