খবর৭১ঃ
শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোলঃ দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফ এসোসিয়েশনের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন (২০২০-২০২২) আগামী ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে নানা জল্পনা-কল্পনা, আলোচনা-সমালোচনা।
স্টাফ নির্বাচনে বেনাপোল এখন সেজেছে অন্যরুপে। নানা রঙ্গিন পোস্টারে ছেয়ে গেছে গোটা কাস্টমস, বন্দর ও চেকপোস্ট এলাকা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে ভোটারদের অফিস, বাড়ি বাড়ি জনসংযোগ। সর্বত্র আলোচনা এ নির্বাচনকে ঘিরে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফদের মাঝে নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। সর্বত্র সাংগঠনিক তৎপরতা জোরেসোরেই চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোটাররা এ নির্বাচনে প্রার্থীদের ভোটের ফলাফল নিয়ে আগাম হিসাব নিকাশ করতে শুরু করেছে। সবাই ধারনা করছেন এবার পুরাতন ও নতুন মুখের সমন্বয়ে অধিকাংশ নতুন প্রার্থীরা নির্বাচিত হবে। এই নির্বাচন সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুই প্যানেলের প্রার্থীরা নিজেদের বিজয় নিশ্চিত করতে মরিয়া হয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফ এসোসিয়েশনের ১ হাজার ৭শ‘ ২১ জন সদস্য ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
সকাল ৮টা থেকে বেলা ৪টা পর্যন্ত স্টাফ এসোসিয়েশন ভবনে ভোট গ্রহণ করা হবে। এবারের নির্বাচনে ঐক্য পরিষদের রিপন-সাজেদুর ও সমমনা পরিষদের মুজিবর-নাসির দুইটি প্যানেল থেকে ১৭টি পদে ৩৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে প্রচার প্রচারনায় অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ঐক্য পরিষদের রিপন-সাজেদুর পরিষদ। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীরা বেনাপোল, শার্শা, নাভারন, বাগআঁচড়া, ঝিকরগাছসহ বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছেন বাড়ি বাড়ি। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় এবারের নির্বাচনে সমমনা পরিষদের মুজিবর-নাসির পরিষদের প্রার্থীরা রয়েছে বেকায়দায়। তাদের নানা কর্মকান্ডে সাধারন সদস্যদের অধিকাংশ ভোটার এবার তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সাধারন সদস্যরা চায় নতুন পরিষদের অধিকাংশরা ক্ষমতায় এসে তাদের বিরাজমান নানা সমস্যার সমাধান করা হোক।
চেকপোস্ট কর্মরত কতিপয় সাধারন সদস্য জানান, বর্তমান পরিষদের কতিপয় নেতা নিজেদের আখের গোছাতে গিয়ে সাধারন সদস্যদের পেটে লাথি মেরেছে। আমাদের প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধা তারা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিধায় আমরা এবার রিপন-সাজেদুর পরিষদের অধিকাংশদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দীর্ঘদিন একই পরিষদের সিনিয়র নেতারা ক্ষমতায় থাকলে সাধারন সদস্যদের মূল্য দিতে চায় না তারা। আরেক ভোটার জানান, মুজিবর-নাসির সমমনা পরিষদ যে ইশতেহার প্রকাশ করেছে তাতে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। গত নির্বাচনে সমমনা পরিষদের সভাপতি প্রার্থী মুজিবর রহমান বিভিন্ন পথসভায় ও জনসংযোগের সময় কেঁদে কেঁদে বলেছিলেন এটাই আমার শেষ নির্বাচন। আমি আর নির্বাচন করবো না। এবারের মত আমাকে একটি ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন। তিনি সে কথা না রেখে আবারও নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। বারংবার তিনি কি কারণে প্রার্থী হচ্ছেন সেটা সবারই জানা।
বেনাপোলের কয়েকজন সিএন্ডএফ মালিক জানান, মুজিবর-নাসির পরিষদের অনেক নির্বাচিত কর্মকর্তা সাধারন সিএন্ডএফ মালিকদের মূল্যায়ন করে না। তারা সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের কয়েকজন নেতার ধামাধরা। তারা যেভাবে বলে তারা সেই ভাবেই কাজ করে। এর ফলে সাধারন সিএন্ডএফ এজেন্টদের ও কর্মচারিদের কোন মূল্যায়ন করতে চায় না। সেই কারণে এবার অধিকাংশ সাধারন সদস্যরা রিপন-সাজেদুর ঐক্য পরিষদের অধিকাংশ প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে আগ্রহী। তারাও দেখতে চায় নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়ে সাধারন সদস্যদের কতটুকু সেবা দিতে পারে। রিপন-সাজেদুর ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক প্রার্থী সাজেদুর রহমান জানান, এবার নির্বাচনে ভোটারা যদি তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে আমাদেরকে নির্বাচিত করেন, তাহলে আমরা সর্বদা সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকবো। তারা যদি কোন সমস্যার সম্মুখীন হয়, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সেই সমস্যা সমাধানের জন্য জোর চেষ্টা করবো।
চেকপোস্টে যে সমস্যা আছে, তা সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেব। যাতে সুষ্ঠ সমাধান হয়, সে বিষয়ে আমাদের শতভাগ চেষ্টা থাকবে। সেই সাথে ইউনিয়নের সমস্ত কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্বচ্ছতার সহিত করার উদ্যোগ নেব। সর্বোপরি সাধারণ সদস্যদের সকল সুযোগ-সুবিধার জন্য কাজ করে যাব। এ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার আব্দুল হামিদ জানান, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার সকল প্রস্তুুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ১৩ জানুয়ারি স্টাফ এসোসিয়েশনের নিজস্ব মিলনায়তনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোট দিতে সকল ভোটারদের পরিচয় পত্র অবশ্যই সাথে করে আনতে হবে।