খবর৭১ঃ
মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ লাখো মুসল্লীদের চোখের জলে চির বিদায় নিলেন দেশের অন্যতম ইসলামী চিন্তাবিদ জমিয়তে ওলামায়ের কেন্দ্রিয় সহ সভাপতি আল্লামা তাফাজ্জুল হক। হবিগঞ্জের কৃতি সন্তান তাফাজ্জুল হকের জানাজা অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লাখো মুসল্লী।
সোমবার সকাল ১০টায় তাঁর হাতে গড়া প্রিয় প্রতিষ্টান উমেদনগর জামিয়া ইসলামীয়া আরাবিয়া টাইটেল মাদ্রাসা ময়দানে নামাজে জানাজা অনুষ্টিত হয়।এতে অংশ নেন সিলেটের সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, হেফাজতে ইসলামীর কর্নধার মাওলানা আহমেদ শফির ছেলে আসাদ মাদানী, হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোঃ আলমগীর চৌধুরী, বেফাকের সেক্রেটারী জুনায়েদ আহমদ বাবু নগরী, দেশ বরন্য উলামায়ে কেরামসহ অসংখ্য মুসল্লী।গতকাল রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লীরা আসতে থাকেন। সকাল থেকে মুসল্লীদের উপস্থিতিতে গোটা শহর যানজটে পরিনত হয়। ফলে কয়েক কিলোমিটার হেটে মুসল্লীরা জানাজা স্থলে পৌছান। লোকে লোকারন্য হয়ে পড়ে মাদ্রাসার ময়দান।মাদ্রাসার বাইরে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তায় মুসল্লীগন জানাজায় অংশ নেন। মরহুম তাফাজ্জুল হকের বড় ছেলে মাওলানা মাসরুরুল হক জানাজা নামাজের ইমামতী করেন। পরে মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে তাঁকে দাফন করা হয়।তিনি গতকাল রবিবার বিকেল সোয়া ৪টায় তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন।
তাকে সিলেট নেওয়ার সময় পথিমধ্যে মারা যান। তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৮২ বছর। তিনি ৫ ছেলে ৪ মেয়ে সহ অসংখ্য ভক্ত রেখে গেছেন।উল্লেখ্য, শাইখ তাফাজ্জুল হক দাঃবাঃ ১৯৩৮ সালে হবিগঞ্জের কাটাখালী গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। ১৯৬১ সনে তিনি সফলতার সাথে চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদীস সম্পন্ন করার পর বিশ্বের অন্যতম ইসলামী বিদ্যাপীঠ পাকিস্তানের ‘জামিয়া আশরাফিয়া লাহোরে’ পাঠ গ্রহন করেন।পরে তিনি ভারতের দারুল উলূম দেওবন্দের প্রিন্সিপালের নিকট ‘খুসূসী দরস’ বা ‘বিশেষ পাঠ’ গ্রহন করে ১৯৬৩ সালে দেশে ফিরে আসেন। তিনি কুমিল্লার দারুল উলুম বরুড়া মাদ্রাসা, আশরাফুল উলূম বালিয়া মাদ্রাসা ও জামিয়া ইসলামিয়া ময়মনসিংহে অধ্যাপনা ও শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেন।মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তিনি হবিগঞ্জে উমেদনগর ঐতিহ্যবাহী জামিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় যোগ দেন।
মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি এই মাদ্রাসার মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করেন। আল্লাম তাফাজ্জুল হক বাংলা ও উর্দুতে লেখা মূল্যবান অনেক গ্রন্থের রচয়িতা ছিলেন। এছাড়াও ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করার পাশাশাশি তিনি নারীদের ইসলামী শিক্ষায় অগ্রগামী করার জন্য প্রতিষ্ঠা করেন জামিয়া শারইয়্যাহ মহিলা মাদ্রাসা।