খবর৭১ঃ বছরের শুরুর দিন থেকে ব্যাংকগুলোতে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিট (১০ শতাংশের নিচে) কার্যকরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ১ জানুয়ারি থেকে শিল্প খাতে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শিগগির এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
মঙ্গলবার বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান বাংলাদেশ ব্যংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।
সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত দেড় বছরে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক দফায় দফায় নয়টি সুবিধা দিয়েছে। কিন্তু সরকারি ব্যাংক এবং কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক ছাড়া বাকিগুলো ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামায়নি। সুদহার এক অঙ্কে না এলেও নয়টি সুবিধার চারটিতেই ব্যাংকগুলো প্রায় ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা পেয়েছে।
ব্যাংকগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১৫ এপ্রিল থেকে নগদ জমা সংরক্ষণ হার (সিআরআর) কমিয়ে দ্বিসাপ্তাহিক গড় ভিত্তিতে ৫.৫ শতাংশ এবং দৈনিক ভিত্তিতে ন্যূনতম ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত হিসাবে ব্যাংকগুলো এক্ষেত্রে ১১ হাজার ১১২ কোটি টাকার সুবিধা পায়।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে ব্যাংকের করপোরেট করহার ৪২.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। এতে ব্যাংকগুলো ২.৫ শতাংশ ট্যাক্স সুবিধা পায়। ফলে ১৩ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকার সুবিধা পেয়েছেন ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকরা। ব্যাংক সংগঠনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কৃষিখাতে প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে রক্ষিতব্য সাধারণ প্রভিশন সংরক্ষণের হার ২.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সময়ে এতে ব্যাংকগুলো ৫৩৪ কোটি টাকা সুবিধা ভোগ করেছে। একইভাবে গৃহায়ণ খাতে রক্ষিতব্য সাধারণ প্রভিশন সংরক্ষণ হারেও সুবিধা দেয়া হয়। গৃহায়ণ খাতে সাধারণ প্রভিশন সংরক্ষণের হার ২ শতাংশ থেকে ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। এতে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংকগুলো ২৫৫ কোটি টাকা সুবিধা পায়।
উল্লিখিত সুযোগ-সুবিধাসহ বেশকিছু সুপারিশ চূড়ান্ত করে এ সংক্রান্ত গঠিত কমিটি। সুদহার কমানোর সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদনটি ১২ ডিসেম্বর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন তিনি। এর আগে ১ ডিসেম্বর রাতে ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামানকে প্রধান করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত ১৮ ডিসেম্বর অর্থমন্ত্রী বলেন, ১ জানুয়ারি থেকে (এক অঙ্কের সুদের হার) কার্যকর করার চেষ্টা করছি, সে কারণে তারা (কেন্দ্রীয় ব্যাংক) একটি প্রজ্ঞাপন ইস্যু করবে৷ সে প্রজ্ঞাপনে সব কিছু থাকবে, আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও কাজ করতে হবে৷’