খবর৭১ঃ রোহিঙ্গা গণহত্যায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়ার করা মামলার জবাবদিহিতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। শুনানি শেষে শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারের গণহত্যার অভিযোগে আইসিজেতে গাম্বিয়ার করা মামলায় তিন দিনের শুনানি বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। শেষ দিন প্রথমে গাম্বিয়া ও পরে মিয়ানমার পুনরায় নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন এবং অপর পক্ষের বক্তব্য খ-ন করে।
দুই দেশের বক্তব্য শোনার পর আদালতের প্রেসিডেন্ট আবদুলকোয়াই আহমেদ ইউসুফ শুনানির মুলতবি ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে যত শিগগির সম্ভব আদালত তার সিদ্ধান্ত উভয় পক্ষকে জানানোর কথা বলেন আদালত প্রেসিডেন্ট।
প্রতিক্রিয়ায় জানানো হয়, নেদারল্যান্ডসের হেগে পিস প্যালেসে গত ১০-১২ ডিসেম্বর এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আদালতকে রোহিঙ্গাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে বলার পাশাপাশি মিয়ানমারে সংঘটিত গণহত্যায় দোষীদের শাস্তির আওতায় এনে এখনো রাখাইনে চলমান হত্যাকা- বন্ধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ওআইসির পাঁচ সদস্যের পক্ষে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার শুনানিতে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল। প্রতিনিধি দলের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান যোগ দেন।
প্রতিক্রিয়ায় জানানো হয়, বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা সমস্যা এবং তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার পাশাপাশি রাখাইনের নিজ ভূমে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া বিশাল শরণার্থীদের বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছে।
গণহত্যায় দায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিজিতে গাম্বিয়ার করা মামলার শুনানি শুরু হয় ১০ ডিসেম্বর। শুনানির প্রথম দিনে গাম্বিয়া গণহত্যার বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক তুলে ধরে। পরদিন ১১ ডিসেম্বর গনহত্যার অং সান সু চির নেতৃত্বে মিয়ানমারের প্রতিনিধি তার উপস্থাপনা দেন।
আইসিজিতে উপস্থিত থাকা ছাড়াও বাংলাদেশের নেতেৃত্ব দেওয়া পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক আইসিসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তিনি আইসিসির কর্মকর্তাদের বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে বাংলাদেশের সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
গত ১০ ডিসেম্বর গাম্বিয়ান আইন ও বিচারমন্ত্রী এবং আইনজীবীদের দল এবং রোহিঙ্গা বিষয়ে কানাডার বিশেষ দূত বব রায়ের সম্মানে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়া যৌথভাবে আয়োজিত একটি সংবর্ধনায় যোগ দিয়েছিল বাংলাদেশের এই প্রতিনিধি দল।
প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব (এশিয়া ও প্যাসিফিক) মাসুদ বিন মোমেন, অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সুফিউর রহমান, ইরানের নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গাওসুল আযম, নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মোহাম্মদ বেলাল প্রমুখ।