মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুরঃ
সৈয়দপুরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরী ও পরিবেশের দায়ে বিক্রমপুর বনফুল হোটেল মালিকের ৪০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ মাসের কারাদন্ড এবং মায়ের অভিযোগে মাদকাসক্ত পুত্রকে ৬ মাসের কারদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার ও গত মঙ্গলবার পৃথক দুটি অভিযান পরিচালনা করে ওই দন্ডাদেশ দেয়া হয়। দন্ডাদেশপ্রাপ্ত মাদকাসক্ত ওই যুবককে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে জরিমানার টাকা দিয়ে রেহাই পান হোটেল মালিক।
সূত্র জানায়, প্রায় ৩ মাস আগে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে অত্যাধুনিক সাজে চালু করা হয় বিক্রমপুর বনফুল সুইটস এ্যান্ড রেস্টুরেন্ট নামক একটি তৈরী খাবার প্রতিষ্ঠান। সে সময় থেকে হোটেলের চাকচিক্য বজায় রাখলেও খাদ্য তৈরী ও পরিবেশেনে ছিল অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।
এনিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন ওঠে খাবার খেতে আসা মানুষজনের মাঝে। বিষয়টি পৌছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কানে। এ অবস্থায় সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকারের নেতৃত্বে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই হোটেলে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ওই হোটেলে রান্নাঘরসহ ওই হোটেলের ভেতরে টয়লেটের পাশে অপরিচ্ছন্ন একটি কক্ষে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখা পঁচা, বাসি গ্রিল কাবাব মাছ, মাংস, বিভিন্ন প্রকার মিস্টান্নের অস্তিত্ব পায় দলটি। পরে নোংরা পরিবেশে খাবার তৈরী, পঁচা ও বাসি খাবার সংরক্ষণ ও গ্রাহকদের মাঝে সরবরাহ করার দায়ে ওই হোটেল মালিক সুবোধ ঘোষের ৪০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার। পরে দন্ডপ্রাপ্ত হোটেল মালিক জরিমানার টাকা পরিশোধ করে জেল থেকে রেহাই পান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মো. অহিদুল হক সরকার, পৌর স্যানিটারী পরিদর্শক মো. আলতাফ হোসেন সরকার, উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহকারী সুফি আমানত শাহসহ থানা পুলিশ সদস্যরা।
এর আগে গত মঙ্গলবার মায়ের অভিযোগে মাদকাসক্ত পুত্রকে ৬ মাসের কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দন্ডপ্রাপ্ত ওই যুবকের নাম মো. রেজাউল করিম খোকন (৩০)। সে পুরাতন বাবুপাড়ার মৃত ওয়াজিউল্লাহর পুত্র।
সূত্র জানায়, মাদকাসক্ত ওই যুবক প্রায়ই তার অসহায় মা ও স্ত্রীর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতো মাদকের টাকা দেয়ার জন্য। টাকা না দিলে অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যেত। তাকে মাদকের পথ থেকে ফেরাতে অনেক চেষ্টা করা হলেও কোন লাভ হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে অসহায় মা আঞ্জুয়ারা বেগম উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকারকে অভিযোগ দেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে মাদকাসক্ত যুবক খোকনকে ৬ মাসের কারাদন্ডাদেশ দেন। ওইদিনই তাকে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ।