বেনাপোল পৌরসভার উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে

0
608
বেনাপোল পৌরসভার উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে

শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : বেনাপোল পৌরসভার উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে। গত দু’দিনে (রবি-সোমবার) বেনাপোলের সাদিপুর মৌজার পাঁচুয়ার বাওড় কান্দার রাস্তার ঢালাই কাজ শুরু হলে বিভিন্ন অনিয়ম চোখে পড়ে পথচারিদের। যা সহ্য করতে নাপেরে সোমবার(২-ডিসেম্বর) সকালে সংবাদ কর্মীদের খবর দেয় স্থানীয়রা। বলেন, এক বস্তা সিমেন্টে ১২ ঝুড়ি খোয়া ও ৬ ঝুড়ি বালি মিশিয়ে ঢালাই দেওয়া হচ্ছে। বলেন, রাস্তাটির উন্নয়ন কাজের জন্য রডের খাচা তৈরি করা হয়েছে বার/বার ইঞ্চি। সলিংয়ে দেওয়া হয়েছে খোয়ার চেয়ে বালির অংশ অনেক বেশি।

এসময় স্থানীয়রা আরো বলেন, এ রাস্তার সিডিউলের সাথে ১২ থেকে ১৪টি উন্নয়ন কাজের অংশ হিসেবে বাওড়ের কিনারা ঘেষে সিলাপ বসানোতেও রয়েছে ব্যাপক দূর্ণীতি। যা প্রতিবাদ করায় অনেক দিন থমকে গিয়েছেল কাজটি। পরে এলাকাবাসীর সাথে রফা করে পূণরায় এ উন্নয়নের কাজে হাত দেওয়া হয়। যেকারণে সরকারের উন্নয়ন কাজে বরাদ্ধকৃত সিংহভাগ টাকা আলোর মুখ না দেখে পৌর কর্তৃপক্ষের পকেটজাত হয়ে যাচ্ছে। যা সঠিকভাবে তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের ফোনালাপে সোমবার বেলা ১১টার সময় পাঁচুয়ার বাওড় কান্দার রাস্তা উন্নয়নের কাজ দেখতে যাওয়া হয়। এসময় সরেজমিনে দেখা যায়, ঢালাই মেশিনে ১ বস্তা সিমেন্ট, ১২ ঝুড়ি খোয়া, ৩ ঝুড়ি চিকন ও ৩ ঝুড়ি মোটাসহ ৬ ঝুড়ি বালি মিশিয়ে ঢালাইয়ের মিশ্রণ তৈরি করা হচ্ছে। কিছুক্ষণ দাড়াতেই নিয়ম পরিবর্তণ হয়ে এক বস্তা সিমেন্টের সাথে ৯ ঝুড়ি খোয়া ও ৪ ঝুড়ি বালি দিয়ে ঢালাইয়ের মিশ্রণ তৈরি করতে দেখা যায়। পরে রডের খাঁচা িেফতা দিয়ে মেপে দেখা যায় সাড়ে এগার/সাড়ে এগারো ইঞ্চি।

কথা হয় বেনাপোল পৌরসভার প্রকৌশলী আবু সাঈদ’র সাথে। প্রশ্ন জিজ্ঞাসায় তিনি বলেন রাস্তাটির কাজ করছেন এমএলটি এমকে এম আর নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ রাস্তার সাথে একই সিডিউলে আরো ১৪টি নির্মাণ কাজ করা হয়েছে। এখানে যে কাজ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ সিডিউল মাফিক। এখানে ১০ মিলি রড ব্যবহার করে ১২/১২ ইঞ্চি খাঁচা তৈরি করা হয়েছে। ঢালাইয়ের মিশ্রণ তৈরি করা হচ্ছে এক বস্তা সিমেন্টের সাথে ৮ ঝুড়ির একটু বেশি খোয়া ও ৪ ঝুড়ি চিকন-মোটা বালি দিয়ে।

এখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকে না পেয়ে প্রশ্ন থেকে যায় অনেক। পরে বিভিন্ন সুত্রে জানাযায়, বেনাপোল পৌর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিভিন্ন নামে বে-নামে সিডিউল ক্রয় করে নিজেরাই করেন রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থাপনার কাজ। যেকারণে তারাই তদারকি করে কাজগুলো করেন। তাতে শুভঙ্করের ফাঁকি দিলেও টু শব্দটি করতে পারেন না স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে কথা হয় বেনাপোলের কতিপয় রাজনৈতিক ও সামাজিক সচেতন ব্যক্তিত্বর সাথে। সবাই বলেন একই কথা। বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল পৌরসভার এক বড়বাবু বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে বে-নামে সিডিউল ক্রয় করে নিজেরাই করেন সকল স্থাপনার কাজ। সেহিসেবে এযাবত কালের সকল উন্নয়ন কাজেই রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। যা নিয়ে এযাবতকাল বিতর্ক চললেও দেখার কেউ না থাকায় পৌর কর্তাসহ কতিপয় কর্মকর্তারা সামান্য কয়েক বছরে বনেগেছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। মাঝে মধ্যে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কিছু কর্মকর্তারা তদন্তে এলেও পৌর কর্তৃপক্ষের মেহমানদারিতে কিকাজে এসেছেন তাও ভূলে যান। পর্যটন মোটেলে রাত্রি যাপন আর ভারতের হলদিরামের শোনপাপড়ি। সাথে অজ্ঞাত কারিশমা থাকায় দূর্ণীতিগুলো থেকেগেছে অন্ধকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। যা লিখে লাভ নেই বলে মন্তব্য করেন পৌড় খাওয়া এসকল রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্বরা।

উল্লেখ্য, অনেক চেষ্টা করেও বেনাপোল পৌর ইঞ্জিনিয়ার আবু সাঈদ’র কাছ থেকে সডিউলের কপি পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা বলছেন উল্লেখিত রাস্তার কাজে রডের খাচা ৮/৮ করা কথা থাকলেও সাড়ে ১১/ সাড়ে ১১ দেওয়া হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন সিডিউল অনুযায়ী ১২/১২ দেওয়া হয়েছে। দেখা গেছে এক বস্তা সিমেন্টের সাথে ১২ ঝুড়ি খোয়া ও ৬ ঝুড়ি বালি। ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন ভিন্ন কথা। বলেছেন, এক বস্তা সিমেন্ট, ৮ঝুড়ির একটু বেশি খোয়া ও ৪ ঝুড়ি বালি মিশিয়ে ঢালাইয়ের কাজ করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here