খবর৭১ঃ রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর বাংলাদেশের নীতির বিপক্ষে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের শরনার্থীদের স্থানান্তরের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের নীতির বিরোধী।’ রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়ায় সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘যেখানে আমরা সব সময় বলছি যে, রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে। আপনারা আবার স্থায়ীভাবে তাদেরকে রাখার জন্য আপনারা (সরকার) চরের মধ্যে গিয়ে চমৎকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। এর অর্থ হচ্ছে যে, আমরা মেনে নিচ্ছি প্রকারান্তরে রোহিঙ্গারা এখানে থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি এটা সম্পূর্ণ স্ববিরোধী। এই সিদ্ধান্ত মিয়ানমারের যে লক্ষ্য সেই লক্ষ্যের দিকে সরকার যাচ্ছে বলে আমরা মনে করি।’ বড় দুর্নীতিকে আড়াল করতেই শুদ্ধি অভিযান, উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘ক্যাসিনো স্ক্যান্ডালসহ দুর্নীতির বিষয়ে যে শুদ্ধি অভিযান এটাকে সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীরা বলছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা মনে করি যে, এটা (শুদ্ধি অভিযান) মূল দুর্নীতিকে অর্থাৎ জাতীয় দুর্নীতিকে আড়াল করার জন্য এই ছোট-খাটো দুর্নীতিগুলোকে সামনে নিয়ে এটাকে আড়াল করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমগ্র জাতি আজকে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। সরকারের লোকেরা সরাসরি এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। আমরা মনে করি, দুর্নীতি দমন কমিশন তো সব সময় নিরপেক্ষ থাকে না। সেজন্য নিরপেক্ষ একটা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এই দুর্নীতির তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।’
হাইকোর্টের ৯ বিচারপতি নিয়োগে অভিযোগ তুলে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বিচার বিভাগের যে নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা এখন নেই বললে চলে। ইতোমধ্যে নিয়োগ চলছে পুরোদমে। সম্প্রতি হাইকোর্ট বিভাগে ৯জন বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি যে, দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এসব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিচারপতি নিয়োগ দিলে সুষ্ঠু বিচার হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বলে আমরা মনে করি না। বিশেষ করে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে দলীয় নিয়োগগুলো আরও বেশি করে রাজনৈতিক সংকট তৈরি করবে বলে আমরা মনে করি।’
বৈঠকে মহাসচিব ছাড়া খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।