খবর৭১ঃ দেশে ডিশ, ইন্টারনেট এবং টেলিফোনের ঝুলন্ত তারের কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকি ও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তারা একদিকে বিদ্যুতের খুঁটি অবৈধভাবে ব্যবহার করছে, অন্যদিকে নিজেদের লাইন টানতে গিয়ে বিদ্যুতেরই তার কেটে দিচ্ছে। অনেক সময় ট্রান্সফরমারে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের পথে এটিও বড় বাঁধা তৈরি করছে। নভেম্বরের শেষ নাগাদ ঢাকার বিদ্যুৎ খুঁটিগুলোতে থাকা এসব ঝুলন্ত তার কাটতে শুরু করবে বিতরণ কোম্পানিগুলো।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এক আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ কথা বলেন।
‘ঢাকা মহানগরীর রাস্তার পাশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঝুলন্ত তার ও বিতরণ লাইনকে ভূগর্ভস্থ বিতরণ লাইন ব্যবস্থার আওতায় স্থাপনের’ বিষয়ে এ সভা আয়োজন করা হয়।
সভায় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের একটি অংশের বিদ্যুৎ লাইন ১ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মাণ শুরু করছে ডিপিডিসি। আগামী ৫ বছরের মধ্যে রাজধানী ও এর আশপাশের জেলাগুলোর লাইনও ভূগর্ভে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পানি, গ্যাস, টেলিফোন, ইন্টারনেট, টেলিভিশন ক্যাবল নেটওয়ার্কসহ সরকারি-বেসরকারি সব ইউটিলিটির তার-সংযোগগুলোও একইসঙ্গে ভূগর্ভে কীভাবে স্থাপন করা যায় তা নিয়ে পরিকল্পনা তৈরি করা হবে। এতে খরচ ও বিশৃঙ্খলা কমবে এবং খোড়াখুড়িজনিত জনদুর্ভোগও অনেকখানি এড়িয়ে যাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, সরকার নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার ব্যপারে বদ্ধপরিকর। বর্তমানে আমাদের সে সক্ষমতা আছে। কিন্তু সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনের ডিস্টার্বের কারণেও এটি সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যুতের খুঁটিতে অবৈধ ঝুলন্ত তারের কারণে ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিতরণ করা যাচ্ছে না। বিদ্যুতের তার কাটা যাচ্ছে। ট্রান্সফরমারগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা যাচ্ছে না। এতে বছরে ১৬ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়।
নসরুল হামিদ বলেন, ঝুলন্ত তার সরিয়ে ভূগর্ভে নেয়ার জন্য কয়েক বছর ধরে আলোচনা চলছে। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। এখন ঢাকার যেসব স্থানে আন্ডারগ্রাউন্ডে লাইন নেয়া সম্ভব তাদেরকে এ মাসের মধ্যে নিয়ে যেতে হবে। এরপর না নিলে খুঁটিতে থাকা অন্য সব লাইন কেটে দেয়া হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এস এম জিয়াউল আলম ও পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন। বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিটিআরসি, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি, ঢাকা উত্তর/দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, জননিরাপত্তা বিভাগ ও পেট্রোবাংলার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।