খবর৭১ঃ নিয়মিত সাক্ষাতের অংশ হিসেবে শুক্রবার বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে কারা হেফাজতে থাকা বেগম খালেদা জিয়াকে দেখে এসে পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, উন্নত চিকিৎসা না হলে তিনি হয়ত পঙ্গু হয়ে যাবেন। তাই তারা বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে চান। কিন্তু সে জন্য প্যারোল নয়, জামিনে মুক্ত হয়ে খালেদা জিয়াও বিদেশে যেতে রাজি আছেন।
বিবিসি বাংলার সঙ্গে খালেদা জিয়ার অসুস্থতা, পরিবারের পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তার বোন সেলিমা ইসলাম।
সেলিমা ইসলাম বলেন, ‘প্যারোলে নয়, শুধু জামিন পেলেই খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে রাজি আছেন। এখন কোনো প্রক্রিয়াই কাজ করছে না। না জামিন দিচ্ছে, না কোনো কিছুই। উনি (খালেদা জিয়া) প্যারোল চাচ্ছেন না। জামিনে মুক্ত হয়ে বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নেয়াই তার ইচ্ছে।’
বোনের স্বাস্থ্যের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া এখন উঠে বসতে পর্যন্ত পারেন না। কারো সাহায্য ছাড়া বসতে পারেন না। তার হাত বেঁকে গেছে। কথা বলতেও তার কষ্ট হচ্ছে। ওজন কমে গেছে। সবকিছু মিলিয়ে তার পঙ্গু হওয়ার মতো অবস্থা হয়ে গেছে।’
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় যথাক্রমে ১০ ও সাত বছরের কারাদ-ে দ-িত হয়েছেন খালেদা জিয়া। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছিল খালেদা জিয়াকে। গত ১ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়।
যদিও সরকারের দিক থেকে বারবারই জামিন পাওয়ার বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, জামিন পাওয়ার উদ্দেশ্যে বিএনপি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে এসব বক্তব্য দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘তিনি যে হাসপাতালে আছেন সেটি বাংলাদেশের সেরা হাসপাতাল। তিনি এমনকি প্রিজন সেলেও নেই, তিনি কেবিনে রয়েছেন, যখন যা প্রয়োজন সমস্ত চিকিৎসাই তিনি পাচ্ছেন।’
সেলিমা ইসলাম অভিযোগ করেন, হাসপাতালে থাকলেও সেখানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা তেমন কিছুই হচ্ছে না। ডাক্তার সপ্তাহে একদিন আসেন। ফিজিও থেরাপিস্ট ঠিক মতো আসে না…ওখানে কোনো চিকিৎসাই হচ্ছে না। জামিন পেলে বিদেশে তাকে আমরা পাঠাতে চাই। আমি তার বড় বোন।’
এ বিষয়ে মাহবুবে আলম বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক সমস্যাগুলো প্রধানত তার বয়সের কারণে। এই বয়সে এরকম সবারই কম-বেশি কিছু সমস্যা থাকে। আসলে জামিনের কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এসব কথা বলা হচ্ছে।’
জামিনের বিষয়টি সরকারের ওপর নির্ভর করছে এমন মন্তব্য করে খালেদা জিয়ার বোন বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ ওনাদের (সরকার বা কর্তৃপক্ষের) ওপর নির্ভর করছে। ওনারা যদি জামিন দেয় বা পারমিশন দেয় তাহলেই সে যেতে পারবে। সরকারের সঙ্গে দলের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। এখন অন্য কোনো পন্থা তো আমরা অবলম্বন করতে পারবো না।’