বিদ্রোহীদের না রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

0
512
ন্যাম সম্মেলনে যোগ দিতে আজ আজারবাইজান যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

খবর৭১ঃ
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া নেতাদের আসন্ন দলের তৃণমূল সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিতে না রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। কোনো উপজেলা শাখার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দুই জনই বিদ্রোহী হয়ে থাকলে তাদের স্থলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শাখার বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের দিয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। দলীয় সূত্র ইত্তেফাককে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

আগামী ২০-২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন সামনে রেখে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সারাদেশের মেয়াদোত্তীর্ণ সব শাখার সম্মেলন সম্পন্ন করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত আটটি টিম সারাদেশ সফর অব্যাহত রেখেছে। প্রসঙ্গত, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তাদের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ধরে নেয় আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দফতর থেকে পাঠানো শোকজ চিঠির জবাব পাঠানোর শেষ কার্যদিবস ছিল গত ১ অক্টোবর। সারাদেশে ৭ শতাধিক নেতাকে শোকজ চিঠি পাঠানো হয়েছিল। তাদের অধিকাংশই শোকজের জবাব দিয়েছেন। ডাকযোগে পাঠানো শোকজ নোটিশের জবাবে তারা আত্মপক্ষ সমর্থন করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। সাধারণ ক্ষমা করতে আকুতি জানিয়েছেন। অনেকে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে ভবিষ্যতে এমন ভুল আর হবে না বলে অঙ্গীকারও করেছেন। তারা নির্বাচনে অংশ নেয়ার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে নিজ আসনের মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালী নেতাদের দায়ী করেছেন। এ ক্ষেত্রে ৬২ মন্ত্রী-এমপির নাম উঠে এসেছে।

জানা গেছে, বিদ্রোহীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গঠনতন্ত্রের ক্ষমতাবলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাদের শেষবারের মতো ক্ষমা করে দিয়েছেন। তবে পরবর্তী সময় দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে অবস্থান না নিতে তাদের সতর্ক করে দিতে বলেছেন। শিগগিরই বিদ্রোহীদের কাছে দলীয় হাইকমান্ডের সতর্ক বার্তাসংবলিত চিঠি পাঠানো শুরু হবে।

চিঠির জবাবে বিদ্রোহী প্রার্থীরা জানান, তারা দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। পঁচাত্তর-পরবর্তী দুঃসময়ে অনেকে দল ছেড়ে গেলেও তারা যাননি। দলের নেতাকর্মীদের চাপে এবং তৃণমূলের ভোটারদের আবদারের কারণে নির্বাচন করতে বাধ্য হয়েছেন। অনেকেই আছেন তিন পুরুষ ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। তাদের ওপর স্থানীয় নেতাকর্মীদের চাপ ছিল। সম্প্রতি সব বিদ্রোহী প্রার্থীর চিঠির জবাব জমা দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে। তিনি সেগুলো পর্যালোচনা করেছেন। চিঠির জবাবে সন্তুষ্ট হয়ে তাদের ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বুধবার আওয়ামী লীগের এক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ও দুই জন সাংগঠনিক সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। এ সময় বিদ্রোহীদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়।

একজন নেতা বলেন, সর্বশেষ সমাপ্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন; সেসব উপজেলায় সম্মেলন কীভাবে করবেন—সে বিষয়ে দলীয় প্রধানের নির্দেশনা চান তারা। এ সময় শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের ঐ নেতাদের বলেন, ঐসব উপজেলায় সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি গঠন করে তাদের মাধ্যমে সম্মেলন করতে হবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্থলে সংগঠনের বর্তমান কমিটির সহসভাপতি ও যুগ্মসাধারণ সম্পাদকদের দিয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠিত হবে। আওয়ামী লীগের একজন যুগ্মসাধারণ সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইত্তেফাককে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্রোহীদের সাধারণ ক্ষমা করেছেন। কিন্তু তৃণমূলের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি না রাখার নির্দেশ দিয়ে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাদের খুশি রেখেছেন। এটা বিদ্রোহীদের জন্য সতর্ক বার্তাও।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here