খবর৭১ঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত চান ড. কামাল হোসেন। একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সমস্যাগুলো উঘাটন করবে এমন একটি কমিটি গঠনের পরামর্শও দিয়েছেন এই আইনজ্ঞ।
বৃহস্পতিবার দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল এমন দাবি তুলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে তার দল গণফোরাম।
আবরারকে যেভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা স্বাধীনতার আগে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা মনে করিয়ে দেয় মন্তব্য করে বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা কামাল বলেন, ‘যারা রুগ্ন তারাই এসব করতে পারে। মতপ্রকাশের জন্য এভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হাজার বছরের সভ্যতা, ঐতিহ্য, স্বাধীনতার অর্জন ও সংবিধানের ওপর আক্রমণ। সংবিধানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।’
আবরার হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে তিনি বলেন, ‘যেখানে বিচার বিভাগের ব্যক্তিরা থাকুন, প্রয়োজন হলে অন্যরাও থাকুন। সাবেক আইজিও থাকতে পারেন। গতানুগতিক তদন্ত কমিটি নয়, সত্যিকার অর্থে স্বাধীন ব্যক্তি, নীতিবান ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হোক। এ কমিটি গভীরে গিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সমস্যাগুলো উঘাটন করবে।’
গত রবিবার দিবাগত রাতে বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। আবরার বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। সেখান থেকে রবিবার ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ কয়েকজন মিলে আবরারকে লাঠি ও ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে বলে ইতোমধ্যে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে।
আবরারের খুনিদের বিষয়ে ড. কামাল বলেন, ‘১০-১২টা ছেলে, এদেরকে কী বলব আমি? এরা জানোয়ার। আমাদের ছেলেদেরকে আমরা পশুতে পরিণত করছি- এটা ভয়াবহ। আমার সঙ্গে একমত না হলে কাউকে পিটিয়ে মারতে হবে- এটা ষোলো আনা সংবিধানবিরোধী, এটা রাষ্ট্রবিরোধী, দেশদ্রোহিতা। আমি সেজন্য মনে করি, এটার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্ররা লেজুড়বৃত্তির হলে সেটা আর ছাত্র রাজনীতি থাকে না। তার পরিণতি আমরা আজকে দেখতে পাচ্ছি। এরকম সন্ত্রাস আমরা মেনে নিতে পারি না।’