বেনাপোল চেকপোস্টে পাসপোর্ট যাত্রী হয়রানী বন্ধে সাড়াশি অভিযানে…শেখ আফিল উদ্দিন এমপি

0
574
বেনাপোল চেকপোস্টে পাসপোর্ট যাত্রী হয়রানী বন্ধে সাড়াশি অভিযানে...শেখ আফিল উদ্দিন এমপি

খবর৭১ঃ
শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : যশোর-১(শার্শা) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শেখ আফিল উদ্দিন বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর ও সর্ববৃহৎ স্থল প্রবেশ দ্বার বেনাপোল। এই আর্ন্তজাতিক বেনাপোল চেকপোস্ট ব্যবহার করে প্রতিদিন প্রায় ৭হাজার দেশ-বিদেশের পাসপোর্ট যাত্রী যাত্রাযাত করেন। যেকারণে এখানকার লেবার থেকে শুরু করে কাস্টমস, বন্দর, বিজিবি, পুলিশ ও পরিবহন শ্রমিকদের নামে প্রতিনিয়ত যাত্রী হয়রানী ও বিভিন্ন দূর্ণিতীর সংবাদ পত্রপত্রিকায় প্রকাশসহ টেলিভিশনে প্রচারিত হচ্ছে। এসাথে দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোলে হু-হু করে গড়ে ওঠা প্রায় ৩শতাধীক বিভিন্ন এন্টার প্রাইজ নামীয় পাসপোর্ট দালাল, হুন্ডি পাঁচারকারি, গোল্ড পাঁচারকারি ও সিনতাইকারিদের মাধ্যমে পাসপোর্ট যাত্রীরা ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে। তাই, এখন থেকে বেনাপোল চেকপোস্টে পাসপোর্ট যাত্রী হয়রানি করতে দেওয়া হবেনা। থাকবেনা কোন এন্টারপ্রাইজ নামের পাসপোর্ট দালাল কোম্পানী। বন্ধ করতে হবে হুন্ডি ও গোল্ড পাঁচার। সেজন্য যা কিছু করণীয় তার সকল বিষয়য়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘন্টাব্যাপী বেনাপোল চেকপোস্টের সকল দূর্ণিতীবাজদের বিরুদ্ধে এক সাড়াশি অভিযানে একথা বলেন তিনি।

এ অভিযানের সময় তিনি কথা বলেন ভারত-বাংলাদেশে যাতায়াতকারি পাসপোর্ট যাত্রীদের সাথে। সুবিধা-অসুবিধার কথা শোনেন। মতামত নেন। কথা বলেন চেকপোস্ট কাস্টমস, বন্দর, ইমিগ্রেশন ও বিজিবি কর্মকর্তাদের সাথে। কথা বলেন বেনাপোলের সকল পরিবহন কাউন্টারের কর্মকর্তা, এন্টার প্রাইজ ও স্টোর নামীয় পাসপোর্ট দালাল, হুন্ডি পাঁচারকারি, ধূঢ় (নারী-শিশু) পাঁচারকারি ও চেকপোস্টে কর্মরত লেবারদের সাথে।

পরে, পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে খবর পেয়ে বেনাপোল চেকপোস্টে অবৈধ পন্থায় প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন এন্টার প্রাইজ ও স্টোর নামে যেসকল দ্কোানদাররা পাসপোর্ট যাত্রী হয়রানী, ধূঢ় (নারী-শিশু) পাঁচার ও হুন্ডি পাঁচারের সাথে জড়িত তাদের দোকানে অভিযান চালান। হুসিয়ারী দেন। বলেন, পাসপোর্ট যাত্রী হয়রানী বন্ধে এসকল অবৈধ এন্টার প্রাইজ বা স্টোর বন্ধ করতে হবে। এ এলাকায় কোন দূর্ণিতীবাজদের আশ্রয় নেই। নিজে উপস্থিত থেকে বন্ধ করে দেন কয়েকটি অবৈধ ব্যবসার দোকান। সেসময়ে তড়িৎ গতিতে অধিকাংশ এন্টার প্রাইজের মালিকরা দোকান ঘর বন্ধ করে পালিয়ে গেলে তিনি সকলের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বেনাপোল চেকপোষ্টের সকল আগাছা দূর করা হবে। শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছি এবং তা অব্যাহত থাকবে। উপঢ়ে ফেলা হবে সকল দূর্ণিতীর সিকড়। আগামীতে ভোট দিবেন কি /না তা পরের ব্যাপার। তাইবলে কোন অবস্থাতেই আর্ন্তজাতিক বেনাপোল চেকপোস্টের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে দেবনা। জননেত্রী শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযান আর বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

পাসপোর্ট যাত্রী হয়রানী আর ধূঢ় (নারী-শিশু) পাঁচার ও হুন্ডি পাঁচারের সাথে জড়িত যেসকল দোকানে তিনি অভিযান চালান এবং যাদেরকে তিনি হুসিয়ারি দেন তারা হলো আসিফ ট্রেডার্সের মালিক হোসেন আলী, মিলন স্টোরের মালিক মিলন খান, সহোদর রিপন স্টোরের মালিক রিপন হোসেন, আকাশ কম্পিউটারের মালিক নজরুল ইসলাম, আছিয়া এন্টার প্রাইজের মালিক জুম্মান হোসেন, জিয়া স্টোরের মালিক জিয়া, মোশারফ স্টোরের মালিক মোশারফ হোসেন, মামাভাগ্নে এন্টার প্রাইজের মালিক হামজা, রাজলক্ষী এন্টার প্রাইজের মালিক মেহেদী বাবু, রতন এন্টার প্রাইজের মালিক শ্রী কাত্তিক, সাকিব এন্টার প্রাইজ প্রমুখ।

পাসপোর্ট দালালীর অভিযোগে সোহাগ এন্টার প্রাইজের মালিক শহিদুল ইসলাম, জয় ট্রেডার্সের মালিক ফারুখ ওরফে পান ফারুখ, হাফিজুর এন্টার প্রাইজজের মালিক হাফিজুর রহমান, শিমলা এন্টার প্রাইজের মালিক মফিজুর রহমান, রিয়াদ এন্টার প্রাইজের মালিক রবি, পাভেল এন্টার প্রাইজের মালিক পাভেল, সোহাগ এন্টার প্রাইজের মালিক হাসান ফারুখ রিংকু, এনএ এন্টার প্রাইজের মালিক মমিন, কার্ত্তিক এন্টার প্রাইজের মালিক বল্টু, সোহাগ এন্টার প্রাইজের মালিক মহিদুল ইসলাম, হায়দার স্টোরের মালিক সোহাগ, সুফিয়া এন্টার প্রাইজের মালিক আলতাফ মুন্সি, বেলাল স্টোরের মালিক চিটাগাঙ্গা বেলাল, সালমা স্টোরের মালিক আলাউদ্দিন, খোকন এন্টার প্রাইজের মালিক শাহীন ওরফে ছোট শাহীন, সোহাগ এন্টার প্রাইজের মালিক আলমগীর, তিন্নি এন্টার প্রাইজের মালিক সজল প্রমুখ।

উক্ত অভিযানে এমপি শেখ আফিল উদ্দিন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে পাসপোর্ট যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া ব্যতিরেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ঘুষ বাণিজ্য বন্ধ করারও আহবান ব্যক্ত করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন শার্শার নাভারন সার্কেল এএসপি জুয়েল ইমরান, বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক আব্দুল জলিল, বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি) মামুন খান, ইমিগ্রেশন অফিসার ইনচার্য(ওসি) মহসিন পাঠানসহ পুলিশ ও প্রশানের বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারি সংস্থার কর্মকর্তা।

এ সাড়াশি অভিযানে সাংসদ শেখ আফিল উদ্দিনের সাথে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যারা উপস্থিত ছিলেন- শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুজ্জামান, যুগ্ম সম্পাদক ও যশোর জেলা পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল, যশোর জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আসিফ-উদ-দৌলা অলোক, বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব এনামুল হক মুকুল, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও যশোর জেলা পরিষদের সদস্য অহিদুজ্জামান অহিদ, সাধারণ সম্পাদক ও শার্শা সদর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আলেয়া ফেরদৌস, বেনাপোল ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব বজলুর রহমান, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহিম সরদারসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

এসময় এমপি শেখ আফিল উদ্দিন এঁর এই সাড়াশি অভিযানকে স্বাগত জানান স্থানীয় সুধী সমাজের মানুষেরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here