খবর৭১ঃ স্মৃতিভ্রংশ বা ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্তরা ভুলে যাওয়ার প্রবণতার আবর্তে আটকে যায়। দূর অতীতের পাশাপাশি অনেক সময় সাম্প্রতিক অতীতের কথাও এরা মনে রাখতে পারে না। চিকিত্সাবিজ্ঞানে রোগটি আলঝেইমার রোগ নামেও পরিচিত। এই রোগের কোনো প্রতিকার নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রোগটি ক্রমান্বয়ে অবনতির দিকে যায়, আর আক্রান্ত ব্যক্তির সর্বশেষ পরিণতি হয় মৃত্যু। ধূমপান করা, অ্যালকোহল গ্রহণ না করা, সুষম ও সময়মতো খাবার না খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম না করা কিংবা বংশগত কারণে একজন স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে বিজ্ঞানভিত্তিক পত্রিকা প্রসিডিং অব ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, বায়ুদূষণের কারণে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে স্মৃতিভ্রংশ রোগ।
স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, বায়ুদূষণে ধুঁকতে থাকা শহরের বাতাসে ক্ষতি হচ্ছে মানুষের। দূষণের প্রত্যক্ষ প্রভাবে হৃদরোগ, হাঁপানির পাশাপাশি মস্তিষ্কের স্নায়ুতেও ক্ষতি হচ্ছে। স্নায়ুর নিউরোনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও মস্তিষ্কে তথ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজে ঢিলেমি আসে। কখনো কখনো স্নায়ু এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে তথ্য আদানপ্রদানে আর অংশ নিতেই পারে না। যানবাহন থেকে বের হওয়া নাইট্রোজেন-ডাই অক্সাইড, পার্টিক্যুলেট ম্যাটার (পিএম), সালফার-ডাই অক্সাইড এবং অন্য দূষণ পদার্থ সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির সঙ্গে বিক্রিয়া করে তৈরি করে ওজোন গ্যাস। বিশেষত পিএম খুব সূক্ষ্ম হওয়ায় তা আমাদের শ্বাসনালি দিয়ে সরাসরি ফুসফুসে পৌঁছে যেতে পারে। এটাই জমতে জমতে সিওপিডি অর্থাৎ ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ ডেকে আনে। ফুসফুসের কাজকর্ম কমতে শুরু করে। ফুসফুসের অ্যালভিওলাই শুকিয়ে অক্সিজেনের অভাব দেখা যায় শরীরে। ফুসফুসকে যেমন নষ্ট করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এই দূষণ, তেমনই নিউরোনের কার্যকারিতাও কমিয়ে দিতে সক্ষম এই পিএম। এ কারণেই চিকিত্সাবিজ্ঞানীরা স্মৃতিভ্রংশ রোগের জন্য বায়ুদূষণকে এতটা দায়ী করেছেন।-দ্য গার্ডিয়ান