হাবিবুর রহমান নাসির ছাতক প্রতিনিধিঃ
ছাতকের জাহিদপুর জামেয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি নিয়ে প্রায় ৩ মাস ধরে জটিলতা চলে আসছে। সৃষ্ট জটিলতার অবসান না হওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। নির্বাচনের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করা হলেও প্রতিপক্ষের অভিযোগের কারনে নির্বাচিত এ কমিটি অনুমোদন পায়নি বলে জানা গেছে। ১৪ সেপ্টেম্বর পুরাতন কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বর্তমানে কমিটি বিহীন অবস্থায় চলছে মাদ্রাসার কার্যক্রম।
গত ২৮ জুলাই নির্বাচনের মাধ্যমে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জাহিদপুর মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। অতি গোপনীয়তা অবলম্বন করে নির্বাচনের তফশীল ঘোষনার অভিযোগে ওইসময় এলাকারবাসী ও অভিভাবকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। অধিকাংশ অভিভাবক নির্বাচনে তফশীল সম্পর্কে অজ্ঞাত থাকায় ৭টি পদের বিপরীতে ৭ জন প্রার্থী ছাড়া অন্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে পারেনি। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠিত হয়। নির্বাচিত এ কমিটিতে প্রার্থী না হয়েও বিজয়ী হয়েছেন এমন অভিযোগও রয়েছে। গত ৪ আগষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে নির্বাচিত মহিলা অভিভাবক সদস্য লুবনা বেগমের দেয়া অভিযোগে বলা হয়, এ নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়া সত্ত্বেও কিভাবে তিনি নির্বাচিত হলেন। যারা এ অপকর্মের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ারও দাবী জানিয়েছেন এ মহিলা অভিভাবক। এর আগে ১৪ মার্চ মাদ্রাসা বোর্ড কর্তৃক এ প্রজ্ঞাপনে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করে ৬ মাসের মধ্যে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেয়া হয়।
এ নির্দেশনা অনুযায়ী ১৪ সেপ্টম্বর গঠিত আহবায়ক কমিটির মেয়াদ উত্তির্ন হয়। পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ১১ জন মাদ্রাসার হলরুমে অভিভাবক ও স্থানীয় গন্যমান্যদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় মাওলানা ওসমান গনীকে সভাপতি ও মাদ্রাসা সুপার নুরুল হককে সদস্য সচিব করে একটি সিলেকশন কমিটি গঠন করা হলে এলাকাবাসীর তীব্র আপত্তির মুখে গঠিত এ কমিটি আর কার্যকর হয়নি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পর্যন্ত গড়ালে নির্বাচনের মাধ্যমে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয় এবং এ নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রিজাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেয়া হয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পুলিন চন্দ্র রায়কে। গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরাসরি ভোটের মাধ্যমে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গত ৭ জুলাই নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা।
অতি গোপনীয়তা অবলম্বন করে অবৈধ ও একতরফাভাবে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠনের অভিযোগে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের আইনজীবীর মাধ্যমে গত ৫ আগষ্ট লিগ্যাল নোটিশ প্রেরন করা হয়। এ ছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর অভিভাবক, জাহিদপুর গ্রামের বাসিন্দা সামছু মিয়া ও শাহজাহান মিয়া গত ১ আগষ্ট মাদ্রাসা বোর্ডে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও পুলিন চন্দ্র রায় এ ব্যাপারে জানান, জাহিদপুর জামেয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। নির্বাচিত এ কমিটি সম্ভবত এখনো অনুমোদন পায়নি।##