খবর৭১ঃ
পটুয়াখালীর মহিপুর থেকে গোপালগঞ্জ যাওয়ার পথে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক থেকে ছিনতাই হওয়া পাঁচ মণ ইলিশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় ছিনতাইয়ের ঘটনায় ব্যবহৃত দুইটি পিকআপভ্যান ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতার তিনজন হলেন-পিকআপভ্যানের মালিক বিশ্বজিৎ সরকার, পিকআপ ভ্যানচালক তাপস সরকার ও তাদের সহযোগী মনিরুজ্জামান। যদিও ঘটনার সঙ্গে জড়িত মুন্না মোল্লা ওরফে নূরে আলম ও রাশেদ নামে আরও দু’জনকে এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে, তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
শনিবার (১৪ সেপ্টেমর) দুপুর ১২টায় বরিশালের লুৎফর রহমান সড়কস্থ মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তরের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মোকতার হোসেন এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, মাছ ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার বাদী জালাল পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর বন্দর থেকে দেড়লাখ টাকা মূল্যের ৫ মণ ইলিশ মাছ কিনেন। মৎস ব্যবসায়ী জালাল ও তার শ্যালক এলাহি গত ১০ সেপ্টেম্বর (সোমবার) ইলিশগুলো একটি পিকআপ ভ্যান ভাড়া করে গোপালগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। ওই পিকআপভ্যানচালক তাপস ১১ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) ভোরে গাড়িটি বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানাধীন অমৃত গুড়া মসলার ফ্যাক্টরির সামনের ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে থামায়।
এ সময় সেখানে মোটরসাইকেলে করে পলাতক আসামি মুন্না মোল্লা ওরফে নূরে আলম ও গ্রেফতার মনিরুজ্জামান হাজির হন। ঘটনার সময় গ্রেফতার অপর আসামি বিশ্বজিৎ সরকার পাশের রাস্তার মোড়ে অবস্থান নেয়। পরে তারা ইলিশবহনকারী পিকআপ ভ্যানটিকে চালক তাপসের সহায়তায় মহাসড়কের পাশের শাখা রোডে নিয়ে যায় এবং মৎস ব্যবসায়ী জালাল ও তার শ্যালককে পিকআপ ভ্যান থেকে নামিয়ে মারধর করেন এবং হত্যার হুমকি দেয়। এর পরপরই অন্য একটি পিকআপ ভ্যান এনে ইলিশগুলো নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন আসামিরা। পরে তাপস পিকআপ ভ্যান নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। ১২ সেপ্টেম্বর (বুধবার) বিষয়টি এয়ারপোর্ট থানাকে অবহিত করলে পুলিশের ৩টি চৌকশদল অভিযানে নামে। অভিযানে নেমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তিনজনকে গ্রেফতার এবং ছিনতাই হওয়া ৫ মণ ইলিশ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে গ্রেফতার হওয়া আসামিরা আদালতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার নামোল্লেখ করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতের মাধ্যমে মাছগুলো ব্যবসায়ীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. মোকতার হোসেন।
তিনি আরও জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনার আগে মহিপুর থেকে বরিশালে আসতে পিকআপ ভ্যানচালক তাপসের মোবাইল ফোনে প্রায় ৩০টির মতো কল আসে। এর মাধ্যমে তিনি নিজের অবস্থান জানাচ্ছিলেন ছিনতাইকারীদের।
অভিযানে অংশগ্রহণ করেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. আব্বাস উদ্দিন, সহকারী পুলিশ কমিশনার (এয়ারপোর্ট) নাসরিন জাহান, এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম আব্দুর রহমান মুকুলসহ থানা পুলিশের সদস্যরা।