খবর৭১ঃ
একের পর এক ঘটনায় চাপের মুখে পড়েছেন ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। পরিস্থিতি সামলাতে তাঁরা একাধিকবার গণভবনে গিয়েও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাননি বলে জানা গেছে।
গণভবনে প্রবেশের জন্য স্থায়ী পাস ছিল ছাত্রলীগের এই দুই শীর্ষ নেতার। গতকাল বুধবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী এই পাস বাতিলের নির্দেশনা এসেছে। তবে গণভবনের কোনো সূত্র আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। পাস বাতিল নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি রেজওয়ানুল হক। আর গোলাম রাব্বানী বলেন, এমন কিছু তাঁর জানা নেই।
ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে গত শনিবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনের পাস বাতিলের খবরের পর শুরু হয়ে গেছে আগাম সম্মেলনের গুঞ্জনও।
তবে ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে দেখছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন যদি ছাত্রলীগের এই কমিটির ব্যাপারে নতুন কোনো বিবেচনা আসে, সংযোজন বা পরিবর্তনের কোনো প্রশ্ন আসে, আমি মনে করি নেত্রী নিজেই করতে পারেন। যেহেতু কমিটিটা তিনিই করেছেন।’ ছাত্রলীগের আগাম সম্মেলনের বিষয়েও তিনি কোনো সিদ্ধান্ত পাননি বলে জানান।
সভাপতির সামনেই মারামারি
গত মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ সভাপতির গাড়িতে বসে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান সংগঠনের দুই সহসভাপতি শাহরিয়ার কবির ও তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী। এ সময় সভাপতি তাঁদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলে দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। এ ঘটনার পর চিকিৎসা নিতে শাহরিয়ার যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে আর তৌহিদুলকে গাড়িতে করে নিয়ে যান ছাত্রলীগের সভাপতি। শাহরিয়ারের চোখের ওপরের অংশে ছয়টি সেলাই দিয়ে হয়েছে বলে জানা গেছে।
শাহরিয়ারের অভিযোগ, হামলার কারণ ‘সিন্ডিকেট-অ্যান্টিসিন্ডিকেট’। তৌহিদুল সিন্ডিকেটের লোক। অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেন, মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী বলেন, এটা তেমন সিরিয়াস কোনো ঘটনা নয়। স্বার্থ হাসিলের জন্য শাহরিয়ার এই ঘটনাটিকে ব্যবহার করতে চাইছেন।
ওই দিনের মারামারির ঘটনা মুঠোফোনে ভিডিও করতে গেলে হেনস্তার স্বীকার হন দৈনিক ইনকিলাব-এর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নূর হোসেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি।
ডাকসুতে রাব্বানীর কক্ষে এসি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনে নিজের কক্ষে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) লাগিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। আগস্টের শুরুর দিকে রাব্বানীর অফিসকক্ষে এই এসি লাগানো হয়। তবে ডাকসুর অন্য কোনো কক্ষে এসি লাগানো হয়নি। এ বিষয়ে রাব্বানীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই।
তবে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক বলেন, ছাত্রনেতার কক্ষে এসি লাগানোর বিষয়টি নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। তাই প্রস্তাব পেলেও তিনি এসি লাগাতে রাজি হননি।