খবর৭১ঃ
রংপুর-৩ আসনটি জাতীয় পার্টির দুর্গ হিসেবে পরিচিত। দলটির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এখান থেকে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন। এ আসনে জাতীয় পার্টির এখন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
তবে মহাজোটের সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা এরশাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আসনটিতে ছাড় দিতে পারে আওয়ামী লীগ। এ আসনে জোটগতভাবে ভোট করার সম্ভাবনা আছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সে ধরনের ইঙ্গিতই দেয়া হয়েছে।
মহাজোটের প্রার্থী হবেন এরশাদপুত্র সাদ এরশাদ। সে ক্ষেত্রে ভোটের লড়াই হবে ধানের শীষের সঙ্গে লাঙ্গল প্রতীকের। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে জানা গেছে এমন তথ্য।
আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক সদস্যের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, সমঝোতার মানসিকতা থেকেই আসনটিতে রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজুকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
শনিবার রাতে গণভবনে দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভা শেষে প্রার্থিতা ঘোষণার পর উপস্থিত রাজুকে এমন ইঙ্গিতই দিয়েছে দলের হাইকমান্ড। মাঠের অবস্থা বুঝে ১৬ তারিখের মধ্যে মহাজোটগত প্রার্থী ঘোষণা করা হতে পারে।
এ ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদপুত্র শাদ এরশাদ এগিয়ে থাকবেন বলে জানা গেছে। রংপুর-৩ আসনে আগামী ৫ অক্টোবর উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৯ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১১ সেপ্টেম্বর। আর প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১৬ সেপ্টেম্বর। পুরো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম রাজুকে ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হতে পারে এমন মনমানসিকতা নিয়ে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড পরিচালনার কথা বলা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত একটা সমঝোতা হলে সেখানে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে সমর্থন দেয়া হবে। জাতীয় পার্টির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, মহাজোটগত নির্বাচন না হলে বিএনপির প্রার্থী আসনটিতে বাজিমাত করতে পারেন।
আসনটিতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো জানিয়ে বলেন, জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে নিজেদের ভোট ভাগ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে অল্প ভোটেই বেরিয়ে যেতে পারে বিএনপি। এটি মাথায় রেখেই সমঝোতার শেষ চেষ্টা হচ্ছে।
গণভবন সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ বিষয়সহ রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে শাদ এরশাদের মনোনয়নের কথা বলেন রওশন এরশাদ। প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতি সম্মান রেখে আসনটিতে শাদ এরশাদকে ছেড়ে দেয়া হতে পারে।
এদিকে রংপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জাতীয় পার্টিও। সোমবার দলটির এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে বলেছে। তবে এ জন্য মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন পর্যন্ত (১৬ সেপ্টেম্বর) অপেক্ষা করতে হতে পারে।