খবর৭১ঃ
শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া শোক মিছিলে পাইক অংশগ্রহণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম। সেই সাথে তাজিয়া শোক মিছিলে ডিএমপি’র পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
পাইক হলো যারা ‘হায় হোসেন’ মাতম তুলে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি নিয়ে নিজেদের শরীর রক্তাক্ত করেন।
আজ বুধবার সকাল ১১টায় ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে এক সমন্বয় সভায় একথা বলেন তিনি। এসময় উক্ত সভায় ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, সরকারের বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ শিয়া সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জানা যায়, আগামী ০৭ সেপ্টেম্বর ৭ মহরম দুপুর ২টায় আঞ্জুমানে হায়দারীর আয়োজনে হোসাইনী দালান ইমামবাড়া থেকে শোকমিছিলের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র আশুরা উদযাপন শুরু হবে। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর আশুরা পালন শেষ হবে।
সমন্বয় সভায় আশুরার শোকমিছিল আয়োজক কর্তৃপক্ষের প্রতি ১৩টি দিক নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। তা হলোঃ
১। শোক মিছিলের মির্ধারিত রুট ও সময়সীমা (নির্ধারিত সময়ে শুরু ও শেষ) মেনে চলতে হবে।
২। তাজিয়া শোক মিছিলে কোন পাইক যাতে অংশগ্রহণ করতে না পারে সে বিষয়টি আয়োজক সংস্থা নিশ্চিত করবেন।
৩। তাজিয়া শোক মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের নিশান এর উচ্চতা ১২ ফুট এর বেশি হবে না।
৪। তাজিয়া শোক মিছিল ও অন্যান্য অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আয়োজক সংস্থা প্রতিটি সমবেত স্থানে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও মনিটরিং এর ব্যবস্থা করবেন।
৫। আয়োজক সংস্থা পর্যাপ্ত সংখ্যক আইডি কার্ডসহ সেচ্ছাসেবক নিয়োগ এবং যাচাই বাছাইয়ের জন্য ছবিসহ তালিকা সংশ্লিষ্ট উপ-পুলিশ কমিশনার এর অফিসে প্রেরণ করবেন।
৬। তাজিয়া শোক মিছিলে সকল প্রকার ধারালো অস্ত্র, ধাতব পদার্থ, দাহ্য পদার্থ, ব্যাগ, পোটলা, লাঠি, ছোঁড়া, চাকু, তরবারি/তলোয়ার, বর্শা, বল্লব এবং আতশবাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ। পোশাকের সাথেও এগুলো ব্যবহার করা যাবে না।
৭। শোক মিছিল চলাকালীন সময়ে রাস্তার মাঝে বিভিন্ন অলি গলি থেকে আগত লোকদের মিছিলে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। মিছিলে অংশগ্রহণ করতে হলে মিছিল শুরুর স্থানে যেতে হবে।
৮। শোক মিছিল শুরুর স্থানে প্রবেশের আগে সকলকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও হাত দিয়ে দেহ তল্লাশি করে ঢুকতে দিতে হবে। তল্লাশি ব্যতীত কোন অবস্থায় কাউকে মিছিলে ঢুকতে দেয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী রাখতে হবে।
৯। শিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইমামবাড়া ও শোক মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সমাবেত স্থান ও এর আশপাশের সমস্ত এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। সন্ধ্যার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
১০। শোক মিছিলে উচ্চমাত্রার শব্দ তৈরি করার ঢাক-ঢোল, বাদ্য যন্ত্র, পিএ সেট ব্যবহার করা যাবে না।
১১। শোক মিছিল চলাকালীন সময়ে মিছিলের মধ্যে কোন গ্যাপ সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
১২। তাজিয়া মিছিলে পাঞ্জা মেলানোর সময় শক্তি প্রয়োগ করে ভীতিকর পরিস্থিতি ও অনাকাঙ্খিত ঘটনা তৈরি করা যাবে না।
১৩। শোক মিছিল ও আশুরা কেন্দ্রিক অনুষ্ঠানে কাউকে চাদর গায়ে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না।