রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত চার কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে

0
517
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত চার কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার
বালুখালী রোহিঙ্গারা ক্যাম্প। ছবিঃ খবর৭১

খবর৭১ঃ কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. আবুল কালামসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত চার কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ২৫ আগস্ট উখিয়ার ক্যাম্পে লাখো রোহিঙ্গার সমাবেশ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এসব কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সোমবার বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন নিয়োগ অধি-শাখা-১ এর উপ-সচিব মুহাম্মদ আবদুল লতিফ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এসব কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের তথ্য জানা গেছে। তবে কি কারণে এসব কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে তা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে আবুল কালামকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি-অতিরিক্ত সচিব) নিয়োগ করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। নিয়োগকৃত কর্মকর্তা (মো. আবুল কালাম) আগামী ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন। অন্যথায় ওইদিন অপরাহ্ণে বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষনিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজড্) বলে গণ্য হবেন।

একই দিন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. মাহবুব আলম তালুকদারকে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার পদে নিয়োগ করে আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তাকেও আগামী ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদানের জন্য বলা হয়েছে।

এর আগে গত রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ-১ অধি-শাখার পৃথক প্রজ্ঞাপনে কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের কর্মকর্তা (ক্যাম্প ইনচার্জ- ১ ইস্ট, ১ ওয়েস্ট, ৩, ৪, ৪ এক্সটেনশন ) শামীমুল হক পাবেলকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এবং মো. আবদুল ওয়াব রাশেদকে (ক্যাম্প-ইন-চার্জ, ক্যাম্প-১৩, ১৯ ) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বদলির আদেশ জারি করা হয়। এছাড়াও পৃথক প্রজ্ঞাপনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দুই জন কর্মকর্তাকে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (উপসচিব) মো. খলিলুর রহমান খান ও সিনিয়র সহকারী সচিব (ক্যাডার বহির্ভূত) মো. আহসান হাবিব। একইদিন জাহাঙ্গীর আলম নামে আরেক এসিআইসিকেও প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

তবে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম বলেছেন, সাতজন ক্যাম্প ইনচার্জকে বদলি করা হয়েছে। রোহিঙ্গা সমাবেশের কারণে নয়, চাকুরী বিধি অনুসারেই তাদের বদলি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তবে, কারা এ তালিকায় রয়েছেন তা তৎক্ষণাৎ জানাতে পারেননি তিনি।

সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ কীভাবে আয়োজন হলো সে বিষয়ে খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রোহিঙ্গা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটি। এছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কেন ব্যর্থ হলো সেটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। গত ২৮ আগস্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির বৈঠকে এ আলোচনা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক প্রমুখ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বৈঠকে গত ২৫ আগস্ট কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের সমাবেশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এতো বড় সমাবেশ সেখানে হলেও মাঠ প্রশাসন থেকে ঢাকার প্রশাসনকে অবহিত কেন করা হয়নি, সে বিষয়টি আলোচনা উঠে আসে। এছাড়া এ সমাবেশ আয়োজনের পেছনে কারা ছিল সে বিষয়েও আলোচনা হয়। একই সঙ্গে গত ২২ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া কেন ব্যর্থ হলো সেটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা সংকটের দুই বছর উপলক্ষে মহা-সমাবেশের ডাক দেন রোহিঙ্গা নেতা মুহিব উল্লাহ। ঘোষণা অনুযায়ী প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার সমাগম ঘটে ওই মহা-সমাবেশে। কিভাবে আশ্রিত রোহিঙ্গারা এ সমাবেশ করলো তা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় সর্বত্র।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here