টেকনাফে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ঃ রোহিঙ্গা শীর্ষ সন্ত্রাসী নুর মোহাম্মদ নিহত

0
884
রোহিঙ্গা শীর্ষ সন্ত্রাসী নুর মোহাম্মদ নিহত
রোহিঙ্গা শীর্ষ সন্ত্রাসী নুর মোহাম্মদ। ছবিঃ সংগৃহীত।

খবর৭১ঃ

কক্সবাজারের টেকনাফ রোহিঙ্গা শিবিরের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী, ক্যাম্প ভিত্তিক ইয়াবা কারবারের নিয়ন্ত্রক ও যুবলীগ নেতা ফারুক হত্যার প্রধান আসামি নুর মোহাম্মদ পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার জাদিমুড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মৃত কালা মিয়ার ছেলে।

আজ রবিবার ভোররাত ৫ টার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া পাহাড়ি এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাটি ঘটেছে। এ সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

পুলিশ জানায়, রবিবার ভোরে টেকনাফ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি এম এস দোহার নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ধৃত দুর্ধর্ষ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নুর মোহাম্মদ কে নিয়ে উপজেলার হ্নীলা জাদিমুড়া ২৭ নম্বর ক্যাম্পের পাহাড়ী জনপদের আস্তানায় অবৈধ অস্ত্র  উদ্ধার অভিযানে যায়। এ সময় রোহিঙ্গা উগ্রবাদী সংগঠন এবং ইয়াবা কারবারি সিন্ডিকেটের সশস্ত্র সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে নুর মোহাম্মদকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা গহীন পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়। উভয় পক্ষের গোলাগুলি শেষে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে নুর মোহাম্মদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নুর মোহাম্মদ পাহাড়ের ত্রাস হিসেবে পরিচিত। সে একাধারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অস্ত্র ও ইয়াবা কারবারের নিয়ন্ত্রক ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টার পর পুলিশ তাকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরে আজ ভোররাতে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকে সহ পাহাড়ে অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধার অভিযানে যায় পুলিশ। সেখানে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা তার সন্ত্রাসী বাহিনী ও পুলিশের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় নুর মোহাম্মদ নিহত হয়েছে।

ওসি প্রদীপ আরো বলেন, ঘটনাস্থল তল্লাশী করে ৪টি এলজি, ১টি থ্রি কোয়াটার, ১৮ রাউন্ড গুলি, ২০ রাউন্ড খালি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের মৃতদেহ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এই ব্যাপারে তদন্ত স্বাপেক্ষে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে রোহিঙ্গা শীর্ষ সন্ত্রাসী নুর মোহাম্মদ পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর রোহিঙ্গা শিবিরের সাধারণ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাসিন্দারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মিষ্টি বিতরণের খবর পাওয়া গেছে।

প্রসঙ্গত, হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া ২৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করতেন নুর মোহাম্মদ। তিনি একজন পুরাতন রোহিঙ্গা। ১৯৯২ সালের দিকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে জাদিমুড়া এলাকায় বসতি স্থাপন করেন। পরবর্তীতে স্থানীয় প্রভাবশালীর মেয়ে বিয়ে করে এদেশে তার ভিত মজবুত করতে চেষ্টা শুরু করেন।

দীর্ঘ সময় তিনি সীমান্তে ইয়াবা কারবার নিয়ন্ত্রণ করতেন। পরে ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে টেকনাফে আশ্রয় নিলে তিনি সবকটি ক্যাম্পে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সন্ত্রাসী বলয় গড়ে তুলেন। এই সন্ত্রাসী সংগঠনের সশস্ত্র সদস্যরা গত ২২ আগস্ট রাতে হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া এলাকার বাসিন্দা ও যুবলীগ নেতা মো. ওমর ফারুককে অপহরণ করে এবং একই রাতে তাকে গুলি করে হত্যা করেন।

এর আগে ওমর ফারুকের হত্যায় জড়িত তিন রোহিঙ্গা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here