খবর৭১ঃ
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ চুয়াডাঙ্গায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে গেছে। শুক্রবার দুপুর থেকে গত ৭২ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৩৫ জন রোগী চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ডেঙ্গু রোগী নিয়ে এমনিতেই চিকিৎসকরা অনেক ব্যস্ত, তার ওপর ডায়রিয়া বাড়তি রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে চিকিৎসক নার্সদের হিমশিম খেতে দেখা গেছে। ডেঙ্গুর সাথে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ায় রোগী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বাড়তি আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। রবিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসাতালে গিয়ে দেখা গেছে একের পর এক রোগী আসছে।
হাসপাতালের মেঝে ওয়ার্ড, বারান্দা, চলাচলের পথ, এমনকি ট্রলি উঠানোর সিঁড়িতেও ডায়রিয়া রোগীতে ঠাসা। বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে ব্যস্ত চিকিৎসক ও নার্সরা। আক্রান্তদের সাথে কথা বলে জানা গেছে জেলার সব এলাকা থেকে ডায়রিয়া রোগী আসছে হাসপাতালে।
রোগী জেলার শহরের মাষ্টার পড়ার জসিম উদ্দীনের স্ত্রী অনামিকা (২৫) জানান, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে তাঁর স্বামীর হঠাৎ বমি শুরু হয়। এরপর পাতলা পায়খানা। শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ৮-১০ বার পায়খানা করে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। সকাল ৮টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সিট না পেয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে বারান্দায়। এখানে এসেও ৫-৭ বার পাতলা পায়খানা হয়েছে। তবে ডাক্তার চিকিৎসা দেয়ার পর অনেকটাই সুস্থ। কি কারণে তাঁর স্বামী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন বুঝতে পারছেন না।
ডায়রিয়ার রোগী জেলার আলমডাঙ্গা উজেলার আসমান খালি গ্রামের আমির আলী জানায়, শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কতবার পায়খানা হয়েছে হিসাব নেই। কিছুক্ষণ পরপরই টয়লেটের চাপ হচ্ছে। শুনেছি ডেঙ্গু হলে পাতলা পায়খানা, বমি ও মাথা ব্যাথা হয়। তাই আতঙ্কিত হয়ে হাসপাতালে চলে আসি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসাপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. পরিতোষ কুমার ঘোষ জানান, অতিরিক্ত পাতলা পায়খানা, ও বমি অবস্থায় রোগীরা হাসপাতালে আসতে থাকেন। শুক্রবার থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে আসছে। একজনের চিকিৎসা দিতে না দিতেই আরো কয়েকজন আসতে থাকে। রোগীর চাপে তারা হিমসিম খাচ্ছেন। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার ডা. শামিম কবির জানান, গত ৭২ ঘন্টায় রবিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ১৩৫ জন ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭০ জন পুরুষ, ৭৯ জন নারী ও একজন শিশু। আক্রান্তদের মধ্যে ৫-৬ জনের ডেঙ্গুর পরীক্ষা দেয়া হয়েছে। বাকিরা স্বাভাবিক ডায়রিয়ার রোগী বলেই মনে হচ্ছে। আক্রান্তদের খাবার ও ফ্লুইড স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্যালাইন মজুদ আছে। ওয়ার্ডে সিট না থাকায় যেখানে ফাঁকা জায়গা আছে সেখানে রেখে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অস্বাভাবিক হারে রোগটি ছড়িয়ে পড়ায় ঘটনাটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক ব্যাধি বিভাগকে জানানো হয়েছে।