রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে সরকার ব্যর্থ: ফখরুল

0
463
রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে সরকার ব্যর্থ: ফখরুল

খবর৭১ঃ সরকারের ব্যর্থতায় দুই বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার বিকালে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেছেন, গত দুই বছর ধরে রোহিঙ্গারা এ দেশে এসেছে। এই দুই বছরে সরকার এতই ব্যর্থ হয়েছে যে, দিনক্ষণ তারিখ ঠিক করেও সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গার মধ্যে একজনকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে পারেনি সরকার। অর্থাৎ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে পুরোপুরিভাবে তারা ব্যর্থ হয়েছে।

সরকারের ‌‌ ‘দুঃশাসনে’ দেশের শাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সারা দেশে তারা (সরকার) একটা লুটের রাজত্ব কায়েম করেছে। যেখানেই যাবেন সেখানে দেখবেন আওয়ামী লীগের লোকেরা লুটপাট ছাড়া আর কোনো কিছু করছে না। যার ফলে আজকে সবকিছু ভেঙে পড়ছে, শাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। আজকে দুঃশাসন দেশে একটা অসহ্য, অস্বাভাবিক দুঃসহনীয় পরিবেশ বিরাজ করছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এই সরকার খুব সুপরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে। শুধু গণতন্ত্র নয়, রাজনীতিকেই ধ্বংস করছে। ১/১১তে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত হয়েছিল বিরাজনীতিকরণের সেই ধারাই এখন চলছে। পুরোপুরিভাবে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে তাদের প্রতিপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করে তাদের একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠা করা। দেশে বিচারব্যবস্থা, আইনের শাসন, ন্যায়-নীতি বলতে কিছুই নেই। এখন শুধু একদল একনীতি একটাই প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে সেটা হচ্ছে আওয়ামী লীগ।

আন্দোলন গড়ে তুলতে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সংগ্রামের কোনো বিকল্প নেই, ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। আজকে গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়েই এই যে মনোস্টার দানবকে সরাতে হবে। তা না হলে একাত্তর সালে যে চেতনা নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম সেই চেতনা ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।

সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার সর্বত্রভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। হাজার হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। সম্পূর্ণ এই সরকারের অব্যবস্থা ও তাদের অযোগ্যতার কারণে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে তথ্যমন্ত্রী বলেছেন যে, বিএনপি একটি খুনির দল। উনি ভুলে গেছেন যে, উনারা ১৯৭২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই খুন শুরু করেছিলেন। বিএনপি কিন্তু খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। বিএনপি কখনও খুনের দায়ে পড়েনি। জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির সাবেক মহাসচিব ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘ব্যারিস্টার সালাম তালুকদার স্মৃতি সংসদ’।

সংগঠনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমাজ উদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে ও সদস্য শামসুজ্জামান মেহেদীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা সিরাজুল হক, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, রশিদ-উজ-জামান মিল্লাত, নিলোফার চৌধুরী মনি, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, হাবিবুর রশীদ হাবিব, ওয়ারেছ আলী মামুন, সুজাত আলী, সালাম তালুকদারের জামাতা এম হাসান ও ভাতিজী সাদিয়া হক বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে প্রয়াত আবদুস সালাম তালুকদারের স্ত্রী মাহমুদা সালামসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here