খবর৭১ঃ অবশেষে কাওরান বাজারের চাঁদাবাজি ঠেকাতে স্থাপিত হচ্ছে পুলিশ ফাঁড়ি। খুব শিগগিরই এর কার্যক্রম শুরু হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট কাওরান বাজারে পলিথিনবিরোধী সচেতনতামূলক সভা ও পরিচ্ছন্নতা অভিযানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, সম্প্রতি কাওরান বাজারে চাঁদাবাজির কিছু কিছু খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমি স্পষ্ট করে বলছি, চাঁদাবাজরা কাওরান বাজার ছেড়ে চলে যান। যারা চাঁদাবাজি করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণের পরই উদ্যোগ নেওয়া হয় পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের।
উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, ১৭০০ শতাব্দী থেকেই এখানে বাজার ছিল। ১৮০০ শতাব্দীর শেষের দিকে কাওরান সিং নামের একজন মারওয়াড়ি ব্যবসায়ী এখানে প্রথম মার্কেট খোলেন। তার নামেই এই বাজারের নামকরণ হয়েছে। মুঘল আমলে এই বাজারের কাছে একটি চেকপোস্ট ছিল।
রাজধানীর অন্যতম বড় কাঁচাবাজার কাওরান বাজার। এখনে রয়েছে বিভিন্ন সরকারি অফিস তেমনি রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেশ কয়েকটি মিডিয়া হাউজ। তবে দিনের বেলা বোঝার উপায় নেই, কাওরান বাজারে কি পরিমাণ কাঁচামাল আমদানি হয়। সন্ধ্যার পর থেকেই পালটে যায় দৃশ্যপট। শত শত ট্রাক ভর্তি করে দেশের দূর-দূরান্ত হতে কাঁচামাল আসতে শুরু হয়। কাঁচামাল ঘিরে শুধু ব্যবসায়ী নয়, ট্রাক থেকে কাঁচামাল নামানোকে ঘিরে জড়িত কয়েক হাজার মানুষ। যাদের জীবন-জীবিকা এ বাজার ঘিরে। দিনের বেলা কোনো মার্কেটের বা কাঁচামাল আড়তের শেডে ঘুমিয়ে কাটায়। সন্ধ্যার পর আবার নেমে পড়ে কাজে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কাওরান বাজার যেমন রাজধানীর অন্যতম কাঁচাবাজার, তেমনি এখানে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য সীমাহীন। আর কাওরান বাজারের চাঁদাবাদি নিয়ে গত তিন দশকে হানাহানির ঘটনাও কম হয়নি। গত তিন দশকে ট্রিপল মার্ডারসহ দেড় শতাধিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ট্রিপল খুনের ঘটনা ঘটেছিল ২০০৮ সালের শুরুর দিকে। তবে ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর কাওরান বাজারের দৃশ্যপট পালটে যায়। খুন মারামারির ঘটনা অনেকাংশে কমে যায়। তবে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি কমলেও অপ্রকাশ্যে চলছে চাঁদাবাজি। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই থানা পুলিশের পাশাপাশি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও কাজ শুরু করেছে।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম অর রশিদ তালুকদার জানিয়েছেন, পুলিশ ফাঁড়ির জায়গা এখনও নির্ধারণ হয়নি। দেখার কাজ চলছে। খুব শিগগিরই জায়গা নির্ধারণ হবে। তিনি বলেন, আমি সদ্য তেজগাঁও থানায় যোগদান করেছি। যোগদানের পর পরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। সে মতে কাজ শুরু করেছি। আশাকরি কাওরান বাজারের আইন-শৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারব। এ জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে এ জন্য সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।