খবর৭১ঃ
৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞাসহ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে প্রায় ৩ মাস সাগরে মাছধরা বন্ধ ছিল। ফলে চরম আর্থিক অনটনের শিকার হয়েছেন জেলেরা। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় গত ৯ আগস্ট থেকে সাগরে যাওয়া শুরু করে জেলেরা। ঈদের আগের দিন ১১ আগস্ট পর্যন্ত কক্সবাজারের অর্ধলক্ষাধিক জেলে মাছ শিকারে সাগরে রয়েছেন বলে জানিয়েছে জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতি। সে হিসেবে সাগরের ঢেউয়ের নাচনে দূলে কক্সবাজারের অর্ধলক্ষাধিক জেলে সোমবারের ঈদুল আজহা পালন করছেন।
পবিত্র কোরবানির ঈদ উপেক্ষা করে পেটের দায়ে বঙ্গোপসাগরে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে খালি চোখেই দেখা যাচ্ছে বলে জানান উপকূলীয় এলাকার লোকজন।
বোট মালিকরা জানান, সাগরে মাছধরার উপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গত প্রায় পক্ষকাল আগে ফের মাছ ধরা শুরু হলেও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বার বার হোঁচট খেয়ে তীরে ফিরে আসে গভীর সাগর থেকে মাছ আহরণকারী ইলিশ জালের বোটগুলো। ফলে নিষেধাজ্ঞার আগে থেকে গত প্রায় ৩ মাসে সাগর থেকে আসেনি কোন ইলিশ। তবে গত ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার থেকে সামুদ্রিক আবহাওয়ার অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে আসায় ঈদের আনন্দকে পরোয়া না করেই গত শুক্রবার থেকে শত শত মাছ ধরার বোট সাগরে রওনা দেয়। এসব বোটের জেলেরা সোমবার বঙ্গোপসাগরেই ঈদ করছেন।
কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ বলেন, কক্সবাজারের পাঁচ সহস্রাধিক বোটের লক্ষাধিক জেলের অধিকাংশই এখন সাগরে। সোমবার প্রায় আড়াই হাজার বোটের অন্তত অর্ধলক্ষাধিক জেলে সাগরে ঈদ করছেন। গভীর সাগরেই তারা পাশাপাশি বোট রেখে সকালে ঈদের জামাত করেছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মাছ ধরে তারা ঘাটে ফিরতে শুরু করবে।
আরও পড়ুনঃ ঈদের লম্বা ছুটিঃ মুখরিত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
এদিকে, মাছের অভাবে সাগরপাড়ের এ শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারিঘাট গত প্রায় ৩ মাস ধরে খা খা প্রান্তরে পরিণত হয়েছে বলে জানান ফিশারীঘাটস্থ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী।
জেলেরা জানান, সাগরে মাছধরার বড় নৌকায় ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট নৌকায় ৫ থেকে ১৭ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র ২ জন জেলে। নৌকাগুলোর মধ্যে ইলিশ জালের বোটগুলো গভীর বঙ্গোপসাগরে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো উপকূলের কাছাকাছি মাছ ধরে।
ইলিশ জালের বোটগুলো পক্ষকালের রসদ নিয়ে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। বিহিন্দি জালের বোটগুলো সাগর উপকূলে ছোট প্রজাতির মাছ ধরে যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়।