বয়স অনুযায়ী ফিটনেস এবং ডায়েট

0
1283
বয়স অনুযায়ী ফিটনেস এবং ডায়েট

খবর৭১ঃ  বয়সের সঙ্গে ডায়েট বা খাওয়ার-দাওয়াতেও বদল আনাটাই বাঞ্ছনীয়। ‘ভাল ডায়েট’ এর অর্থই হচ্ছে বয়স এবং শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী খাওয়া-দাওয়ার একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা। তাই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে বয়স অনুযায়ী আপনার ডায়েট প্ল্যান।

কথায় বলে চেঞ্জ ইজ দ্যা অনলি কনস্ট্যান্ট। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন আসে আসে আমাদের চেহারায় এবং মনে। অনেকসময় নানাধরনের শারীরিক সমস্যা ঘিরে ধরে। কিন্তু নিয়মমাফিক চললে কিন্তু এসব সমস্যা থেকে অনেকটাই দূরে থাকা সম্ভব। প্রয়োজন রোজকার জীবনে একটু ডিসিপ্লিন এবং সঠিক ডায়েট ও ফিটনেস প্ল্যান। অনেকে ভাবেন, বয়স হলে তবেই বোধহয় ডায়েট করা দরকার কিংবা সমস্যা দেখা দিলে কবেই ওয়র্কআউট করতে হয়। এটা কিন্তু ঠিক নয়। সব বয়সেই একটা রুটিন মেনে চলা দরকার। তার মানে এই নয়, পছন্দমতো খাবারে ইতি কিংবা সারাদিন ওয়র্কআউটে ব্যস্ত থাকতে হবে। প্রত্যেকটা বয়সের একটা নিজস্ব প্রয়োজন এবং চাহিদা থাকে। সেই অনুযায়ী সাজিয়ে ফেলুন আপনার রুটিন। তাহলেই দেখবেন বয়স ধরে রাখা কোনও সমস্যাই নয়। আর বয়স মানে তো শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, মনটাকে সজীব সর্বোপরি ভাল থাকুন। তাহলেই দেখবেন, বয়সটা কেবল একটা সংখ্যা মাত্র। বয়সের সঙ্গে সুন্দরভাবে, সুস্থ ভাবে উপভোগ করুন জীবনকে।

বয়স অনুযায়ী ফিটনেস এবং ডায়েট

যেকোনও বয়সেই সুস্থ এবং ফিট থাকার জন্য ওয়র্কআউট খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে বয়সের সঙ্গে প্রয়োজন বুঝে ওয়র্কআউট প্ল্যান বেছে নেওয়া উচিত।

আমাদের শরীর অনেকটা মেশিনের মতো। মেশিন সচল রাখার জন্য যেমন তেল দেওয়া প্রয়োজন, শরীরেরও প্রয়োজন সঠিক ফিটনেস প্ল্যান। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি ঠিকমতো ওয়র্কআউট করা যায়, তাহলে কিন্তু বয়স বাড়লেও শরীর ফিট থাকে এবং বার্ধক্যজনিত সমস্যা সহজে ঘিরে ধরতে পারে না। সঠিক ফিটনেস প্ল্যানের অন্তর্গত তিনটি বিষয়, এক্সারসাইজ, ডায়েট এবং মানসিক স্বাস্থ্য। তিরিশের পর থেকেই ধীরে ধীরে মাসল ক্ষয় হতে থাকে। যাঁরা সারাদিন বসে কাজ করেন, কায়িক শ্রম একেবারেই হয় না তাঁদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আরও প্রকট। আসলে পেশি যত বেশি ব্যবহার হয় ততই পেশির ফাইবার এবং শক্তি বাড়ে, এবং ব্যবহার না হলে ক্রমশও ক্ষয়ে যেতে থাকে। এখন পেশি যত বেশি ক্ষয় হবে ততই বার্ধক্য আসতে থাকে। তাই পেশিকে বজায় রাখতে হলে জোর বাড়ানোর এক্সারসাইজ় করা উচিত। তবে মনে রাখবেন সব এক্সারসাইজ় সকলের জন্য নয়। এক্সারসাইজ়, বয়স, সামর্থ্য এবং শারীরিক প্রয়োজন অনুয়ায়ী বেছে নেওয়াই বাঞ্ছনীয়। তিরিশের মধ্যে বয়স হলে শারীরিক সমস্যা থাকে না বা কম থাকে। তাঁরা পায়ের জন্য স্কোয়াট, সিঙ্গল লেগ ডেড লিফ্ট, স্টেপ আপ এইধরনের ব্যায়াম করতে পারেন। শরীরের উপরের অংশে জোর বাড়ানোর ব্যায়ামের জন্য করতে পারেন চেস্ট প্রেস, ডাম্বেল রো, ডাম্বেল শোল্ডার প্রেস, পুশ আপ ইত্যাদি। এই ধরনের ব্যায়মগুলো মাসলকে টোন রাখে মাসলের ফাইবার বাড়ায়। এতে শরীর টানটান থাকে, পেশি ব‌জায় থাকে। ফলে বয়সজনিত ছাপ পড়ে না।

চল্লিশের পর কিন্তু অনেকেরই হাঁটুতে ব্যথা শুরু হয়। ফলে স্কোয়াট, ক্রাঞ্চ এই ধরনের ব্যায়াম করা সম্ভব হয় না। এরকম ক্ষেত্রে এক্সারসাইজে একটু বদল আনতে হবে। যেমন পায়ের জোর বাড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন ফিটেড লেগ এক্সটেনশন, লেগ প্রেস ইত্যাদি। স্টেপ আপ করুন ছোট বক্সে। একে হাঁটুতে অনেক কম চাপ পড়ে। কোমরে ব্যথা থাকলে কোর এক্সারসাইজ় বেছে নিন। যেমন প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক, ব্রিজ ইত্যাদি। একে পেটের মাসল শক্তিশালী হয়। এছাড়া একটা বয়সের পর ডায়াবিটিস, হাই কোলেস্টেরল, হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। এইসময় অনেকেই সহজ সমাধান হিসেবে হাঁটা বা জগিং বেছে নেন।  কিন্তু আধুনিক রিসার্চ বলছে অনেকক্ষণ ধরে হাঁটা কিন্তু হাঁটুর জন্য ভাল নয়। কারণ বেশি হাঁটলে হাঁটুর বন্ধনীর অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ওভার ইউস ইনজুরি হয়, যার থেকে আর্থ্রাইটিসের সম্ভাবনা বাড়তে পারে। তাছাড়া যাদের হাঁটুর সমস্যা রয়েছে তাঁদের জন্যও একটানা অনেকক্ষণ হাঁটা বিশেষ উপযোগী নয়। ৪০ এর পর মাত্রাতিরিক্ত জগিং বা হাঁটা পেশির ক্ষয় ঘটায় এবং কর্টিসল হরমোন ক্ষরণের ফলে শরীরে বিশেষ করে মুখে ক্লান্তি এবং বয়সের ছাপ আনে। তবে নিয়ম মেনে হাঁটা এবং জগিং শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তাই সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন ২০-২৫ মিনিট হাঁটুন। চেষ্টা করুন ২ মিনিট জোড়ে এবং ১ মিনিট আস্তে, এই ফর্মে হাঁটতে। ফিটনেস লেভেল ভাল থাকলে ১ মিনিট জগিং করে ১ মিনিট হাঁটুন। পায়ের সমস্যা থাকলে হাঁটার বদলে সাইক্লিং বেছে নিতে পারেন। সাইক্লিংয়ে শরীরের অনেকটা ওজন সিটের উপর থাকে বলে হাঁটুর উপর অনেক কম চাপ পড়ে। এছাড়া সাঁতারও খুব ভাল অপশন। কারণ, সাঁতারে মাসল কিংবা জয়েন্টের উপর খুব একটা চাপ পড়ে না। তাছাড়া জলের প্লবতার কারণে যেকোনও ধরনের সাঁতারের সময় একটা কুশনিং এফেক্ট পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি বেছে নিন কিছু সহজ যোগাসন। ভুজঙ্গাসন, ধনুরাসন, জানুশিরাসন, উষ্ট্রাসন, এগুলি কোমর এবং হাঁটুর নমনীয়তা বাড়ায়। জয়েন্ট পেন কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া যোগাসন মনকে শান্ত করে এবং মন ভাল রাখতেও উপকারী। এর পাশাপাশি ঘুমের আগে কিছুটা সময় রাখুন রিল্যাক্সেশনের জন্য। ঘুমোনোর আগে আধঘণ্টা বই পড়ুন, গান শুনুন বা মিনিটপনেরো হাঁটুন। এতে মন শান্ত হয় এবং ঘুমও ভাল হয়। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমোনোর চেষ্টা করুন। ঘুমের সময় শরীর আমাদের বিভিন্ন ঘাটতি পূরণ করার কাজ করে। ফলে পর্যাপ্ত ঘুম শরীরকে তরতাজা করে তোলে।

বয়স অনুযায়ী ফিটনেস এবং ডায়েট

পঞ্চাশের পর কিন্তু এক্সারসাইজে অনেক বদল আনতে হয়। এইসময় শরীরে নানারকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকের ডায়াবিটিস, হার্টের সমস্যা, আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হন। পাশাপাশি দেখা দেয় ওবিসিটি। তাই এক্সারসাইজ় নির্বাচন করতে হবে খুব সতর্ক ভাবে। সবচেয়ে ভাল হয় কোনও একজন বিশেষ়জ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ওয়র্কআউট প্ল্যান করলে। তাছাড়া এই বয়সে অনেকসময়ই অবসাদ ঘিরে ধরে। তাই এক্সারসাইজের পাশাপাশি অনেকটা গুরুত্ব দিয়ে হবে মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে। কিন্তু অনেকেই একঘেয়ে এক্সারসাইজ়ে মোটিভেশন পান না। তাই তাঁদেরকে বেছে নিতে হবে পছন্দের কোনও এক্সারসাইজ়। যেমন ধরুন ফান বক্সিং। হয়তো তিনি বক্সিং পারেন না, শুরু করা যেতে পারে শুধু হাত ছুঁড়ে। যাঁরা খেলা ভালবাসেন তাঁরা বল দিয়ে ওয়র্কআউট, যেমন বল ড্রপ খাইয়ে জগিং করতে পারেন। এই ধরনের এক্সারসাইজে ব্রেনর সঙ্গে চোখ, হাত শরীরের নানা অংশের কো অর্ডিনেশন বেশি হওয়ায় এক্সারসাইজের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়। তাই ওয়র্কআউট যত ইন্টরেসটিং হবে তত ভাল কাজ হয় এবং চিন্তা ভাবনা পজ়িটিভ হয়। এক্সারসাইজের পাশাপাশি বেশি কিছুটা সময় দিন হবে রিল্যাক্সেশনের জন্য। খুব ভাল হয় যদি সময়বয়সিরা একটা গ্রুপ করে এক্সারসাইজ় করতে পারেন। এতে অনেক বেশি উৎসাহ পাওয়া যায়।

যেকোনও ধরনের ওয়র্কআউট করার সময় ঘরে মিউজিক চালিয়ে দিন, এতে ওয়র্কআউট করতে আরও বেশি ভাল লাগে। আসলে আপনি যেই কাজই করুন না কেন, সেখানে আনন্দ খুঁজে পাওয়া খুব জরুরি। ওয়র্কআউট এনজয় করলে অ্যাকশন বেটার হবে বইকি!

সঠিক ডায়েটঃ

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বদলে ফেলুন আপনারা খাওয়াদাওয়ার ধরন। একটু নিয়ম মেনে চলা আর ডায়েটে কিছু রদবদল, এটাই সুস্থ ও সুন্দর থাকার চাবিকাঠি।

সুন্দর চেহারারর পিছনে ডায়েটের একটা বড়সড় ভূমিকা রয়েছে। সঠিক ডায়েট আমাদের শরীরকে যেমন সুস্থ রাখে তেমনই ধরে রাখে চেহারার জৌলুস। ভিতর থেকে আপনি যদি সুস্থ থাকেন তাহলে বাইরে তার প্রতিফলন ঘটবেই। আর এর জন্য দরকার ব্যালেন্স ডায়েট। অর্থাৎ  প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটের সঠিক পরিমাণ উপস্থিতি। এছাড়া প্রয়োজন কিছু ভিটামিন এবং মিনারেল। মুশকিল হল বয়স কম থাকতে ডায়েট নিয়ে আমরা কেউই ভাবতে চাই না। উইকএন্ডে কবজি ডুবিয়ে লাঞ্চ ডিনার ছাড়াও রোজকার টিফিনেও চলতে তাকে পিৎজা, বার্গার, ফ্রাই, রোল। কিন্তু বয়স তিরিশের ঘর পেরিয়ে চল্লিশের দোরগোড়ায় পৌঁছতে না পৌঁছতেই বাড়তি ফ্যাট জানান দেয় তার উপস্থিতি। কোমরের মাপ এক ধাক্কায় ছাব্বিশ থেকে চৌত্রিশ। সাধের জিনস কোমরে তুলতে গিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা। ব্যস, আপনিও ব্যস্তসমস্ত হয়ে শুরু করলেন কঠোর ডায়েট। আর কিছুদিন বাদেই মোটিভেশ হারিয়ে সেই একই রুটিনের পুনরাবৃত্তি। কিন্তু জানেন কি, এরকম করলে ওজন তো কমবেই না, বরং শরীরে জরুরি পুষ্টির অভাবে ম্যালনিউট্রিশন এবং অন্যন্য আরও শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ভাল খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস করুন প্রথম থেকেই। তার মানে বলছি না কখনই বাইরের খাবার খাবেন না। কিন্তু দেখবেন সেটাই যেন রুটিন হয়ে না দাঁড়ায়। নিজেকে একটু যদি শাসনে রাখতে পারেন, তাহলে এটুকু করা কিন্তু কোনও সমস্যাই নয়। এতে বরং যেদিন প্রাণ ভরে খাবেন, সেদিন আক্ষেপ গিল্ট ফিলিংয়ের কোনও জায়গা থাকবে না। আর তাছাড়া ভাল খাবার মানেই তো শুধু ট্যালট্যালে ঝোল বা সবজি সিদ্ধ নয়। হেলদি খাবারও তো সুস্বাদু হতে পারে, তাই না? যেমন, স্যালাডের উপরে একটু অলিভ অয়েল ছড়িয়ে দিলেন বা পছন্দের কোনও স্যালাড ড্রেসিং। এছাড়া আইটেম ইনুযায়ী একটু যদি বুদ্ধি করে খাবারে গোলমরিচগুঁড়ো, লেবুর রস, ধনেপাতা, পার্সলে কুচি বা কারিপাতা ছড়িয়ে দিতে পারেন, দেখবেন নিমেষে স্বাদ বদলে যাবে। এর সঙ্গে প্রয়োজন একটা রুটিন মেনটেন করা। যেমন অনেকই সকালে তাড়াহুড়োয় ব্রেকফাস্ট স্কিপ করেন। এতে কিন্তু করলে শরীর সারাদিন কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় এনার্জি পায় না। সারাদিন খিদে পেতে থাকে। এবং  জাঙ্ক ফুড খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। তাই চেষ্টা করুন রাতেই হাতের কাছে দুধ, কর্নফ্লেক্স, ব্রেড, ফল, বাদাম জাতীয় খাবার রাখতে যাতে সহজেই ব্রেকফাস্ট করে নেওয়া যায়। কিছু হেলদি খাবার নিজের সঙ্গে রাখুন। ছোলা, আখরোট, আমন্ড, ড্রাই মিক্সড ফ্রুট ইত্যাদি সঙ্গে রাখতে পারেন। তাই দুটো মিলের মাঝে খিদে পেলে বাইরের খাবার না খেয়ে এগুলো খেতে পারেন। এতে খিদে মিটবে। আবার শরীরের জন্যও উপকারী। বিকেলে স্ন্যাক্স জাতীয় খাবার সম্পর্কে সচেতন থাকুন। এছাড়া বলব, প্রত্যেকটা এজগ্রুপের একটা নির্দিষ্ট চাহিদা থাকে। আমাদের যে ক্যালরি ইনটেক প্রত্যেক দশকের পর একটু করে কমানো উচিত। কারণ, যত বয়স বাড়ে তত আমাদের খাবারের চাহিদা কমতে থাকে। যেমন ধরুন, কুড়ি থেকে তিরিশ বছর বয়সে আপনার যা ডায়েট থাকবে, তিরিশ থেকে চল্লিশে বা চল্লিশ থেকে পঞ্চাশে কিন্তু সেই একই ডায়েট থাকবে না। তাই বলে পুষ্টির সঙ্গে কোনও কম্প্রোমাইজ় নয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের চাহিদা এবং প্রয়োজন বুঝেই আমাদের খেতে হবে। এছাড়া অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের প্রতি একটা অবহেলার মনোভাব এসে যায়। সমস্যাটা এখানেই। আপনি যদি শরীরের প্রতি নজর না দেন, শরীরই বা আপনার সঙ্গ দেবে কেন? বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শরীরে নানাধরনের হরমোনাল চেঞ্জ হয়। ফলে শরীরে এবং মনে নানাধরনের পরিবর্তন আসে। ওজন বাড়া, শরীর ভারী হওয়ার পাশাপাশি দেখা দিতে পারে অস্টিওপোরোসসি বা মাসল লসের মতো সমস্যা। সবারই যে এগুলো দেখা দেবে তা নয়। কিন্তু সতর্ক থাকতে দোষ কি! আর এই সতর্কতার অন্যতম ধাপ সঠিক ডায়েট। প্রসেসড খাবার, বাইরের তেলেভাজা, জাঙ্কফুড একেবারেই ছেড়ে দিন। বিভিন্ন ধরনের দানাশস্য খান। মটর, ছোলা, রাজমা জাতীয় ডাল ডায়েটে রাখার চেষ্টা করুন। রোজ একটা বা দুটো ফল খান। তবে একদিনে তার বেশি ফল খাবেন না। এর সঙ্গে একটু দুধ বা দুধজাত খাবার খেতে হবে। যাঁরা ওবিস তাঁরা স্কিমড মিল্ক বা ডাবল টোন মিল্ক খান। তেলের ক্ষেত্রে একটু রেস্ট্রিকশন থাকবে। তবে এমন নয়, একেবারেই খাবেন না। শরীরে ফ্যাটেরও প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে গুড ফ্যাটযুক্ত খাবার ডায়েটে রাখুন। চিনি যতটা সম্ভব কমিয়ে দিন। ভাল ফ্যাটযুক্ত খাবার, তাজা ফল, সবজির রস, ডাবের জল ইত্যাদি ডায়েটে নিয়মিত রাখলে ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যও বজায় থাকবে। আর তার সঙ্গে অল্পসল্প নিয়মিত এক্সারসাইজ় রাখুন আপনার শেডিউলে। একদম নিয়মমাফিক প্ল্যান বানিয়ে ফেলুন, দেখবেন বয়সও আপনার কাছে হার মানছে।

বয়স অনুযায়ী ফিটনেস এবং ডায়েট

এছাড়া বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কিছু কিছু শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া এবং হাড়ের ক্ষয়। হাড়জনিত সমস্যায় ডায়েটের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য বয়স কম থাকতেই ক্যালশিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যেস করুন। লো ফ্যাট দই, দুধ, ব্রকোলি, আমন্ড ক্যালশিয়ামের উত্স হিসেবে দারুণ। চিনি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। এছাড়া প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্টও খাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং মিনারেলের সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যায়। তবে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ না করে খাওয়া ঠিক নয়।

বয়সকালে সবার যে এক সমস্যা হবে তা নয়। কারও বয়সের সঙ্গে শরীরে ক্যালশিয়ামের অভাব হয়, কারও বা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়, কারও শুগার বাড়তে পারে। এক এক জনের সমস্যা এক এক রকম। সুতরাং ডায়েট প্ল্যানটাও আলাদা হতে হবে। এরসঙ্গে সমস্যা অনুযায়ী যে রেস্ট্রিকশনগুলো থাকবে তা মানতে হবে। এছাড়া প্রয়োজন হতে পারে কিছু সাপ্লিমেন্টস। কী খাবেন, কী খাবেন না, তা নিয়ে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নিন। এতে রুটিন বানাতেও সুবিধে হবে।

বয়স অনুযায়ী ফিটনেস এবং ডায়েট

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here