খবর৭১ঃ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে প্রিয়া সাহা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে যে অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে ধর্মীয় স্বাধীনতা দেখেছি তা বিশ্বের জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে। শুক্রবার রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ সব কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। তিনি ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ মন্দিরটি ঘুরে দেখেন এবং বৌদ্ধ ধর্মের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে আসার পর গত আট মাসে সবগুলো বিভাগ ঘুরে এবং প্রধান চার ধর্মের উপাসনালয়ে গিয়ে আমার ধারণা হয়েছে যে, ধর্মীয় স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে। এটা আমার দেশের জন্য একটা শিক্ষণীয় বিষয়, পুরো বিশ্বের এখান থেকে শেখার আছে।
তিনি আরো বলেন, মসজিদ-মন্দির-গির্জা আর প্যাগোডা ঘুরে ইমাম, পুরোহিত-পাদ্রিদের কাছ থেকে একটি বার্তাই পেয়েছি, ঐক্যবদ্ধ না থাকলে কোনো দেশের পক্ষেই উন্নতি করা সম্ভব না। ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে ওয়াশিংটনে এক সম্মেলন হয়। সেখানে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গত বুধবার হোয়াইট হাউজে সাক্ষাৎ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
প্রিয়া সাহা ট্রাম্পকে বলেন, ‘স্যার, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। এখানে ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ বিলীন (নিখোঁজ) হয়েছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই। এখনও সেখানে ১৮ মিলিয়ন সংখ্যালঘু মানুষ আছে। আমার অনুরোধ, দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ছাড়তে চাই না। শুধু আমাদের বাংলাদেশে থাকার জন্য সাহায্য করুন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আমার বাড়ি হারিয়েছি। তারা আমার বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, আমার জমি কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু কোনো বিচার হয়নি।’ এসময় ট্রাম্প জিজ্ঞাসা করেন, ‘কারা জমি দখল করেছে? কারা বাড়ি দখল করেছে?’ জবাবে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘মুসলিম মৌলবাদী গ্রুপ এগুলো করছে। তারা সব সময় রাজনৈতিকভাবে শেল্টার পায়। সব সময়।’
ফেসবুকে প্রিয়া সাহার ওই অভিযোগের ভিডিও আসার পর তা নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার করা অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এমন কোনো তথ্য বা পরিসংখ্যান নেই যাতে ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ নিখোঁজ হয়েছে।