খবর৭১ঃ
আদেশ দেওয়ার পরও মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের তীব্র সমালোচনা করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, গণমাধ্যমে রিপোর্ট এসেছে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে শিশুসহ ২১ থেকে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে একজন মেয়র বলেন এখন পর্যন্ত কিছুই হয়নি। আমাদের প্রশ্ন উনি একথা কীভাবে বলেন? আমরা তো দেখতে পাচ্ছি এটা মহামারি আকারে রূপ নিতে বাকি নেই।
মশা নিয়ন্ত্রণে দুই সিটি করপোরেশন কী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সেসব পদক্ষেপের কার্যকারিতা সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানিতে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে এই মন্তব্য এসেছে।
আদালত বলেন, মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে আদেশ দেওয়ার পরও সিটি করপোরেশন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। প্রতিবছর জনগণের করের টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে কিন্তু মশা নিয়ন্ত্রণে কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। মশা নিয়ন্ত্রণে এর আগে প্লেন থেকে ওষুধ ছিটানো হলেও এখন সেরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন আদালত।
এর আগে একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২ জুলাই হাইকোর্ট ঢাকা শহরে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে ঢাকার দুই সিটি (উত্তর ও দক্ষিণ) করপোরেশনের মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রতি আদেশ দেয়। সেই প্রতিবেদন নিয়ে শুনানি হয় আজ।
আদালতে দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নুরুন্নাহার নূপুর। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
সিটি করপোরেশনের আইনজীবী ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুর খবর বেদনাদায়ক উল্লেখ করে বক্তব্য দেওয়ার পর আদালত বলেন, যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের স্বজনরাই এর ব্যথা বোঝেন। এতে দুর্নীতিবাজদের খারাপ লাগার কথা নয়। কারণ তাদের সন্তানেরা এদেশে থাকে না।
পরে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ বা নিধনে মানহীন ওষুধ আমদানি, সরবরাহ ও কেনায় দুর্নীতি ও জড়িতদের ব্যাপারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে সরকারের সহায়তায় জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর ওষুধ আমদানি করে মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দেন আদালত।
আগামী ২০ আগস্ট এই আদেশের অগ্রগতি প্রতিবেদন দুই সিটি করপোরেশনকে আদালতে উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। সেদিন এ ব্যাপারে পরবর্তী শুনানি হবে।