খবর৭১ঃ
গত কয়েক দিনের টানাবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নওগাঁর মান্দার আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে কসবা ও বিষ্ণপুর ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম এবং নতুন করে আত্রাই উপজেলার হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
আত্রাই নদীর বাঁধ ভেঙে কসবা, বিষ্ণুপুর ও হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেই সাথে জোতবাজার, বানডুবি, বাগাতিপাড়া, গোয়ালমান্দা, কালিকাপুর, দ্বারিয়াপুর বেড়িবাঁধ, খুদিয়াডাঙ্গা পূর্বপারসহ অন্তত ৩০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে দিন-রাত পাহারা দিচ্ছেন।
এতে করে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। উপজেলার ওই তিন ইউনিয়নের অধিকাংশ ফসলি জমির ধান, সবজির মাঠ ও পুকুরের মাছ পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার ৯০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে সব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ। আর প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে।
কয়েকজন বানভাসি জানান, হঠাৎ করে বাঁধ ভেঙে গেছে। তারা স্বপ্নেও ভাবেনি এভাবে বাঁধটি ভেঙে যাবে। এখন শুধু পানি আর পানি। সব কিছু ডুবে গেছে। থাকার জায়গা ও খাওয়া-দাওয়া নেই। অনেক কষ্টে রয়েছেন তারা। বেড়ি বাঁধ ভাঙার কারণে রাস্তায় এসেছেন তারা। তাই তারা দ্রুত বাঁধটি মেরামত করার জোর দাবি জানান।
মাঠের ফসল হারিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে বন্যার্তদের। কিভাবে সংসার চলবে; ছেলে-মেয়েদের স্কুলের বই-খাতা কিনে দিবে এ চিন্তায় ঘুম নেই চোখে। শুধু মাঠের ফসল নয়; সাথে শত শত পুকুরের মাছও ভেসে গেছে বন্যার পানিতে।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মুশফিকুর রহমান জানান, সকল টিম কাজ করছে আর সব জায়গায় খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছি। বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ শুরু করা হয়েছে। একই সঙ্গে মোমবাতি, খাবার স্যালাইনসহ অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার থেকে আত্রাই নদীর পানি কমার সম্ভবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবার ভোর রাতে মান্দা উপজেলার চকবালু এলাকায় আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ প্রায় ২০০ ফিট ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়ে মানুষ।