খবর৭১ঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নতুন স্টেডিয়াম পাচ্ছে দেশের ছয়টি উপজেলা। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ি, চট্টগ্রামের মীরসরাই, কুমিল্লার তিতাস এবং খুলনার কয়রা উপজেলায় স্টেডিয়ামগুলো নির্মাণ করা হবে।
এজন্য ১১৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্বাচিত ‘ছয়টি উপজেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণ’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজনের উপযোগী করে এসব স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে। এদিকে, প্রস্তাবিত সব উপজেলায় সাড়ে পাঁচ একর জমি নির্বাচন এবং অভিন্ন নকশায় স্টেডিয়ামগুলো নির্মাণের তাগিদ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
কমিশনের এ তাগিদের প্রেক্ষিতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, একই মাঠে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার সুযোগ করতে কমপক্ষে ছয় একর জমির প্রয়োজন। এ বিবেচনায় প্রকল্পের আওতাভুক্ত স্টেডিয়ামগুলোর জন্য ছয় একর করে জমির সংস্থান রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেকটি স্টেডিয়াম অভিন্ন পরিকল্পনায় নির্মাণ করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা বলেন, যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর প্রকল্প মুল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সিদ্ধান্ত প্রতিপালন করায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। তারা জানান, প্রকল্পটি সদ্য সমাপ্ত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দহীন অনুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তারা আরও জানান, প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়নি। তবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রকৌশলীরা প্রকল্পের প্রস্তাবিত স্থানগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন প্রণয়ন করেছে। তার ভিত্তিতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরি করা হয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শরীর চর্চা ও খেলাধুলার মাধ্যমে দেশের তরুণ সমাজ এবং জনগণের শারীরিক, মানসিক ও নৈতিক উৎকর্ষ অর্জন করা সম্ভব। জাতীয় জীবনে শৃঙ্খলা, সুস্বাস্থ্য, নেতৃত্ব ও চরিত্র গঠনে খেলাধুলার অবদান অপরিসীম। বিশেষ করে দেশের তরুণ ও যুব সমাজকে ক্রীড়া কার্যক্রমে আগ্রহী করে প্রাণচাঞ্চল্য ও চিত্ত বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতেও খেলাধুলার ভূমিকা অনস্বীকার্য। খেলাধুলার উন্নয়নের জন্য ক্রীড়া অবকাঠামো ও ক্রীড়া সুবিধাবলী থাকা অপরিহার্য। সে জন্য সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও সরকার দেশে খেলাধুলার সুবিধাবলী সৃষ্টি, সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ী, চট্টগ্রামের মিরসরাই, কুমিল্লার তিতাস এবং খুলনার কয়রা উপজেলা থেকে প্রায় প্রতিবছর বিভিন্ন ইভেন্টের খেলোয়াড় জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেন। সম্ভাবনাময় এ উপজেলাগুলোয় কোনো স্টেডিয়াম নেই। প্রধানমন্ত্রী ওই উপজেলাগুলোতে একটি করে স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- জমি অধিগ্রহণ, মাটি ভরাট, প্যাভিলিয়ন ভবন নির্মাণ, পাবলিক টয়লেট, সীমানা প্রাচীর, প্যালাসাইডিং কাজ, সাধারণ গ্যালারি, ওয়ার্কওয়ে, এপ্রোচ রোড এবং ড্রেন নির্মাণ।
এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্ব পাওয়া আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনসহ প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের মাধ্যমে দক্ষ খেলোয়াড় গড়ে তুলতে সাহায্যে করবে।’