খবর৭১ঃ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিদেশি সহায়তা নিলেও বাংলাদেশ ঋণের ফাঁদে পড়বে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, জিডিপির তুলনায় বাংলাদেশে বিদেশি ঋণ এখনো বেশ কম।
গত ১ থেকে ৫ জুলাই করা এই সফরে চীনের সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে চুক্তি হয়েছে। একজন সাংবাদিক জানতে চান, চীনের সঙ্গে চুক্তি করে পাকিস্তান, চীন বেকায়দায় আছে। বাংলাদেশেরও এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে কি না।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ঋণ নিয়ে বেশ সতর্ক। আর আমাদের বৈদেশিক ঋণের বোঝাটা খুব বেশি না। জিডিপির ১৪ ভাগ ঋণ আমাদের। সেটা কিন্তু আমরা সময়মতো পরিশোধ করি। আজ পর্যন্ত আমরা এখানে হিসেব করেই চলছি, কাজেই আমরা যেটা নেই হিসেব করে নেই।’
‘আমাদের বার্ষিক যে উন্নয়ন বাজেট সেটার ৯০ ভাগই আমরা আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করি। আরেক বিষয় যেমন পদ্মা সেত…পদ্মা সেতু কিন্তু আমরা আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে করে যাব। হ্যাঁ, চীনের কনট্রাকসান কোম্পানি পদ্মা সেতুটা করে দিচ্ছে, আমরা কিন্তু পেমেন্ট দিচ্ছি। কাজেই সবার এটা বুঝতে হবে আমরা যখন ঋণ নিচ্ছি সেটা হিসেব করেই নিচ্ছি। আমরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক। ওই সতর্ক অবস্থায় কিন্তু আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’
এক সময়ের বন্ধু যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি নিয়ে এক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কার সাথে কার কী যুদ্ধ এবং কার সাথে কার কী মনোমালিন্য সেটা আমার দেখার দায়িত্ব না। আমার দেখার দায়িত্ব হচ্ছে, আমার দেশের উন্নয়নে কে আমাকে সহযোগিতা করছে, কে কী অবদান রাখছে।’
‘মিয়ানমার এত বড় একটা ঝামেলা ফেলল, তাও আমরা কিন্তু মিয়ানমারের সঙ্গে ঝগড়া করতে চাইনি। বরং আমরা আলোচনা চালিয়ে গেছি। এখনও আমরা আলোচনা চালাচ্ছি বা কথা বলছি। আমার কাজ করার ধরণটা একটু আলাদা , আমি একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই চলতে চাই।’
‘আমেরিকার সাথে চীনের একসময় ভালো বন্ধুত্ব ছিল, এখন আবার তাদের সাথে খারাপ সম্পর্ক। আমাদের চেষ্টা থাকবে কে কী করে সেটা দেখা না, কতটুকু আমরা আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি করতে পারি, আমাদের দেশকে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। আমরা কাদের কাছ থেকে সাহায্য পাব সেটাই বিবেচ্য বিষয়। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করি।’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরোধিতায় তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি না হওয়ার বিষয়ে প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, ‘উনি তিস্তার পানি দেননি, উনি দুঃখ করে বলছেন ইলিশ মাছ পাচ্ছেন না। আবার বলছে তিস্তায় পানি নাই। আমি বলতে চাই আমাদের পররাষ্ট্র নীতি খুব পরিস্কার সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরীতা নয়। আপনার যদি লক্ষ্য করে থাকেন দেখবেন আমরা সরকারে আসার পর থেকে সেটা সম্পূর্ণ মেনে চলছি। আমাদের সাথে সকলেরই ভালো বন্ধুত্ব।’