খবর৭১ঃ
বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির হোসেন নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। কিন্তু তার লাশ গ্রামের বাড়ি দাফন করতে কেউ রাজি হচ্ছেন না। এলাকাবাসী নয়নের লাশ গ্রামের বাড়িতে দাফন না করার জন্য তার আত্মীয়-স্বজনকে জানিয়েছেন।
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার পশ্চিম সীমান্তে গলাচিপা উপজেলার ৮ নম্বর বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের গুয়া বাশবাড়িয়া গ্রামে সাব্বির হোসেন নয়ন বন্ডের পৈত্রিক বাড়ি। ওই গ্রামের ফোরকান হাওলাদার ও মোশারেফ হোসেন জানান, নয়ন বন্ডের লাশ আমাদের গ্রামে দাফন করতে দেয়া হবে না।
নয়ন বন্ডের চাচা লিটন মোল্লা জানান, নয়নকে আমি দেখিনি। ওর বাবা খুব ভাল মানুষ ছিলেন। বাড়ির সবাই নয়ন বন্ডের লাশ গ্রামের বাড়িতে দাফন করতে নিষেধ করে দিয়েছেন। নয়ন বন্ডের ঘৃণিত কর্মকাণ্ডের কারণে গ্রামের বাড়ির কেউই নয়ন বন্ডকে আত্মীয় পরিচয় দিতে চাচ্ছেন না।
ওই বাড়ির জাহাঙ্গীর মোল্লা ও জাহিদ মোল্লা বলেন, নয়ন বন্ড আমাদের কেউ না, ওরা বরগুনার বাসিন্দা। ওর বাবা বহু বছর আগে বাড়ি ছেড়ে বরগুনায় বসবাস করেন।
নয়ন বন্ডের সমাপ্তি হয়েছে, এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নয়ন বন্ডের ফুফাতো ভাই দশমিনার বাসিন্দা সাফায়াত হোসেন। পাশাপাশি নয়ন বন্ডকে যারা সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকেও আইনের আওতায় এনে বিচার করার দাবি জানান তিনি।
মঙ্গলবার ভোর রাতে বরগুনার পুরাকাটায় পায়রা নদীর তীরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নয়ন বন্ড নিহত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। প্রাণের শহর তিলোত্তমা বরগুনা নামের একটি আইডি থেকে লেখা হয়েছে, প্রাণের শহর তিলোত্তমা বরগুনার পবিত্র মাটিতে এই পাপীর লাশ দাফন করা কোনো অবস্থাতেই সমীচীন নয়।
মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে বরগুনার পুরাকাটার পায়রা নদীর পাড়ে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন রিফাত হত্যার অন্যতম প্রধান আসামি সাব্বির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড। পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, দুটি শটগানের গুলির খোসা এবং তিনটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এএসপি শাজাহানসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী মিন্নিকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ আরও দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালান। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন তারা।
রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নি দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।