মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর, খবর৭১ঃ
নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরে না বলে পকেট থেকে টাকা নেওয়ার অপরাধে এক পাষন্ড পিতা তাঁর শিশু পুত্রের দুই হাতে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শহরের নিয়ামতপুর চামড়া গুদাম অবাঙালি (উর্দূভাষী) ক্যাম্পে গত শুক্রবার এ নির্মম ঘটনাটি ঘটে। অবুঝ শিশুটি দুই হাতের কবজিতে মারাত্মক দগ্ধ অবস্থায় বর্তমানে রংপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পাষন্ড পিতা কর্তৃক নিষ্ঠুর এ ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা হলেও পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে সর্বত্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বিলম্বে প্রাপ্ত জানা গেছে, শহরের উল্লিখিত অবাঙালি ক্যাম্পের বাসিন্দা কাঠখড়ি ব্যবসায়ী মো. মাহমুদ আলী। ঘটনার দিন গত শুক্রবার ঘরে রাখা ওই ব্যবসায়ীর শার্টের পকেটে থেকে একটি ব্যাংকের চেকের পাতা ও কিছু টাকা খোয়া যায়। এ নিয়ে ওই দিন মাহমুদ আলীর সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর তুমুল বাগবিতণ্ডা ঘটনা ঘটে।
পরবর্তীতে খোয়া যাওয়া চেক ও টাকা ছেলে মামুনের কাছ থেকে উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় মাহমুদ আলী তার ছেলের ওপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এরপর পরিবারের সদস্যদের অগোচরে ছেলে মামুনকে অজ্ঞাত জায়গায় নিয়ে যায় সে। সেখানে কব্জিতে রশি দিয়ে দুই হাত বেঁধে তাতে বোতলে নিয়ে আসা পেট্টোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় পাষন্ড ওই পিতা। এতে তাঁর দুই হাতের কব্জি মারাত্মক দগ্ধ হয়। পরবর্তীতে শিশুপুত্র মামুনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। এরপর হাতে মারাত্মক দগ্ধ মামুনকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর তাকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা প্রদান অব্যাহত থাকে। পরে তার দগ্ধ হাতের সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার পুনরায় রংপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। পেট্টোল ঢেলে আগুনে দেওয়ার ঘটনায় দগ্ধ শিশুপুত্র মো. মামুন শহরের নিয়ামতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।
গতকাল বুধবার বিকেলে নিয়ামতপুর চামড়া গুদামে মাহমুদ আলীর বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে আশপাশের লোকজন জানান, মাহমুদ আলীসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা ছেলেটিকে নিয়ে রংপুরে আছেন।
অবাঙ্গালী ক্যাম্পের নেতা মাজিদ ইকবাল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন জানান, বাবা মাহমুদ আলী পেট্টোল ঢেলে আগুন দিয়ে ছেলের দুই হাতের কব্জি পুড়িয়ে দিয়েছেন।
এদিকে পাষন্ড পিতা কর্তৃক পুত্রকে পেট্রোল দিয়ে হাত পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে অনেকেই ওই পাষন্ডের শাস্তি দাবি করেছেন।
এ ব্যাপারে বুধবার রাতে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহজাহান পাশার সাথে কথা হলে তিনি জানান, ঘটনাটি শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। কিন্তু ওই বাসায় কেউ ছিলনা। তিনি বলেন এ ঘটনায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।