রাকিব হাসান, পটুয়াখালী প্রতিনিধি, খবর ৭১ঃ সরকার আসে সরকার যায় কিন্তু ৪০ বছরেরও বেশি সময়কাল ধরে খালের উপরে একটি ঝুঁকিপূর্ন বাঁশের সাকোঁ দিয়ে চলাচলে দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে ১০ গ্রামের মানুষের।
একটি সেতুর অভাবে বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে ১০ গ্রামের মানুষের সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর আমড়াগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মোল্লা বাড়ির সামনে হুজুর আলীর খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ন এই বাশেঁর সাঁকো দিয়ে বর্ষার সময়ে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আর ৪০ বছরেরও বেশি সময়কাল ধরে এ খালের উপরের ৬০ফুট দৈর্ঘ্যরে বাঁশের সাকোঁই এখানকার মানুষজনের চলাচলের একমাত্র ভরসা।
জাতীয় সংসদ কিংবা স্থানীয় সরকারের নির্বাচন এলেই প্রার্থীরা এই সাঁকোটির পরিবর্তে ব্রীজ কিংবা কালভার্ট নির্মানের আশ্বাস দেন।
কিন্তু নির্বাচন চলে গেলেও এখানে ব্রীজ আর নির্মান হয়না বলে জানান স্থানীয়রা। খালের উপর সংযোগ সেতু না থাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়,মাধ্যমিক স্কুল,কলেজ ও মাদ্রসার শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় জনসাধারন পড়েছে চরম দুভোর্গে।
এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবীর পরও বিদ্যালয় সংলগ্ন হুজুর আলী খালের উপর সংযোগ সেতু নির্মানের ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে বাঁশের তৈরী সাকোঁ দিয়ে শিক্ষার্থীসহ জনসাধারনকে চলাচল করতে হচ্ছে।
কিন্তু বর্ষা মৌসুমে কোন মতেই সাঁকো দিয়ে চলাচল করা সম্ভব হয় না। তবুও থেমে থাকে না চলাচল। বাঁশের সাঁকো পার হয়ে উত্তর আমড়াগাছিয়া,আমড়াগাছিয়া,উত্তর ছৈলাবুনিয়া, কিসমত ছৈলাবুনিয়া, সুবিদখালী সরকারি কলেজ, সুবিদখালী মহিলা ডিগ্রী কলেজ, উপজেলা সদরস্থ সুবিদখালী বাজারে এবং মির্জাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে যেতে হলে এই বাঁশের সাঁকো দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে শিক্ষার্থী সহ এলাকাবাসীর।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গ্রামবাসীদের উদ্যোগে বাশেঁর সাঁকোটি নির্মাণ করা হয় অনেক বছর আগে। নিজেদের উদ্যোগে প্রতিবছরই বাশেঁর সাঁকোটি মেরামত করেন তারা।
এর আগে এখানে ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হতো এ এলাকার মানুষজন। খালের ওপর ব্রিজ না থাকায় দু’পাড়ের মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এখানে ব্রীজটি নির্মান না হওয়ার অভাবে শিক্ষা, চিকিৎসা ও কৃষি ক্ষেত্রেও নানা সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে চলাচলরত ১০ গ্রামের মানুষকে।
ওই গ্রামের প্রবীন বাসিন্দা মাওলানা আবদুর রশিদ বলেন, হুজুর আলী খালের উপর সেতু না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে বিভিন্ন গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকে।
অনেক সময়ে পথচারীরাসহ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পা ফসকে খালে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়।
৩২নং উত্তর আমড়াগাছিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী মো.পারভেজ বলেন, এই সাঁকো পার হওয়ার সময় অনেক ভয় লাগে, কিছুদিন আগে বই-খাতা নিয়ে সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় পা ফসকে পানিতে পড়ে যাই তখন এক ব্যক্তি পানিতে ঝাপিয়ে পড়ে আমাকে উদ্ধার করেন ফলে আমি প্রাণে বেঁচে যাই।
একই গ্রামের আরেক বাসিন্দা ইসলামাবাদ মোহাম্মাদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা গোলাম মোস্তফা বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর যাবৎ আমরা নিজেদের অর্থায়নে এই বাঁশের সাঁকো নির্মান করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি,এই সাঁকোটি ভেঙ্গে গেলে এখানকার ১০ গ্রামের মানুষকে চরম দূর্ভোগে পড়তে হয়,কলাগাছের ভেলা বানিয়ে খালটি পার হতে হয়।
বৃষ্টির সময় পানিতে সাঁকোটি ডুবে গেলে দূর্ভোগ বহুগুনে বেড়ে যায় এবং প্রায় ৭ কিঃমিঃ রাস্তা ঘুরে উপজেলা সদরে যেতে হয়।সাঁকেটি ভেঙ্গে গেলে স্থানীয় গ্রামবাসীদের নিকট থেকে চাঁদা তুলে মেরামত করা হলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হয়।নির্বাচন এলেই প্রার্থীরা এই সাঁকোটির পরিবর্তে ব্রীজ কিংবা কালভার্ট নির্মানের আশ্বাস দেন, কিন্তু নির্বাচন চলে গেলেও এখানে ব্রীজ আর নির্মান হয়না।
এখানকার বসবাসরত ১০ গ্রামের মানুষের দূর্ভোগ লাঘবে এখানে ব্রীজ নির্মানের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানান স্থানীয়রা।