নতুন বাজেটে মোবাইল গ্রাহকের কথা বলার ওপর করের বোঝা আরও বাড়ছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, কথা বলার ওপর (টকটাইম) ‘অতিরিক্ত’ ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক্ক আরোপের প্রস্তাব করা হচ্ছে। বর্তমানে মোবাইল সেবার ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক্ক এবং তার সঙ্গে ১ শতাংশ সারচার্জসহ মোট করের পরিমাণ প্রায় ২২ শতাংশ। এবারের বাজেটে বিদ্যমান করের সঙ্গে ‘বাড়তি’ পাঁচ শতাংশ যোগ হচ্ছে। বাড়তি করহার কার্যকর হলে তখন মোবাইল সেবায় মোট করহার দাঁড়াবে প্রায় ২৭ শতাংশ। ফলে গ্রাহকের কথা বলার খরচ আরও বেড়ে যাবে।
অর্থাৎ একজন গ্রাহক ১০০ টাকা রিচার্জ করলে তা থেকে প্রায় ২৭ টাকা কর বাবদ নিয়ে যাবে সরকার, যা এখন আছে ২২ টাকা। ফলে গ্রাহক যত বেশি কথা বলবে, তত বেশি কর পাবে সরকার। বর্তমানে দেশে মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। বাজেটে প্রস্তাবিত সম্পূরক শুল্ক্ক হার কার্যকর হলে ১৬ কোটি গ্রাহকের ওপর বাড়তি করের বোঝা চাপবে। সংশ্নিষ্ট অপারেটর বলছে, মোবাইলের বহুমাত্রিক সেবা বেড়েছে, যা তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছেছে। এ অবস্থায় মোবাইল খাতে বাড়তি কর আরোপ করলে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে ১০০ জনের মধ্যে ৮৪ জন মোবাইল ব্যবহার করেন।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, মোবাইল সেবার বাইরে এখন প্রতি সিম সংযোজন এবং প্রতিস্থাপনে ১০০ টাকা নির্ধারিত কর দিতে হয়। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে সিমকে প্রথমবারের মতো করের আওতায় আনা হয়। তবে প্রথমদিকে নির্ধারিত কর ছিল ৩০০ টাকা। ক্রমান্বয়ে তা কমিয়ে আনা হয়। গ্রাহকের সংখ্যা বাড়াতে নিজেরাই এই কর দিয়ে থাকেন মোবাইল অপারেটররা। যদিও এই কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে মোবাইল অপারেটররা।
মোবাইল সেবা ঘিরে বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ তৈরি হয়েছে। সেবার ভ্যাট আদায়ের পাশাপাশি মোবাইল সেট আমদানি থেকে বড় অঙ্কের রাজস্ব পায় সরকার। জানা যায়, মোবাইল হচ্ছে স্থানীয় পর্যায়ে রাজস্ব আয়ের দিক থেকে দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত। গত অর্থবছরে এ খাত থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় হয়। এর বাইরে সেট আমদানি বাবদ আয় হয় আড়াই হাজার কোটি টাকা। আগে মোবাইলে সারচার্জ ছিল না। তিন অর্থবছর আগে এর ওপর সারচার্জ আরোপ করা হয়। তবে সারচার্জ বাবদ যে অর্থ আদায় হয়, তা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ মানবসম্পদ উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।