খবর ৭১: পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চলছেই। সোমবার রাতে হিংসার বলি হলেন ৩ জন। অন্যদিকে রোগী মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগে এক জুনিয়র ডাক্তারকে মারধরের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের সব সরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। এদিকে কলকাতার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেঙে যাওয়া বিদ্যাসাগরের মূর্তি মঙ্গলবার দুপুরে হেয়ার স্কুল প্রাঙ্গণে প্রতিস্থাপন করা হয়। সেখানে অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেন, আমার গলা কেটে দিলেও কাজ করব। অন্যদিকে সন্দেশখালির সংঘর্ষের ঘটনায় এনআইএকে দিয়ে তদন্ত করানোর দাবি করেছে বিজেপি।
মমতা বলেন, আমরা টাকা-পয়সা দিয়ে কিছু করি না। হৃদয় দিয়ে কাজ করি। বিদ্যাসাগরের চারটি মূর্তি গড়া হচ্ছে, তাও হৃদয় দিয়ে। একটা মূর্তি ভেঙে তারা কি আমাদের হৃদয়ের চেতনা ভাঙতে চাইছে? সংস্কৃতি ভুলিয়ে দিতে চায়? ভাষা রুদ্ধ করে দিতে চায়? কিন্তু মূর্তি ভেঙে বর্ণপরিচয় মোছা যায় না। মূর্তি ভাঙার জন্য ফের বিজেপিকে দায়ী করে তিনি বলেন, তৃণমূলের কেউ একাজ করলে তাকে ঠাস ঠাস চড় মারতাম। তিনি আরো বলেন, পশ্চিমবঙ্গ গুজরাট নয়। পশ্চিমবঙ্গকে গুজরাট বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে। দাঙ্গাবাজদের রুখে দিতে হবে। বাংলার অপমান দেখলে তা জীবন দিয়ে রুখব। মমতা ঘোষণা দেন, মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামে বিদ্যাসাগরের বসতবাড়ি এবং সেখানকার ভগবতী বিদ্যালয়টিকে হেরিটেজের স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, নির্বাচনী প্রচারকালে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর রোড শো চলাকালীন গোলমালের সময় বিদ্যাসাগরের মূর্তিটি ভাঙা পড়ে। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির কর্মীরাই এটি করেছে।
আরো পড়ুন: ১৩ আরোহীসহ ভারতীয় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত, খোঁজ মিললো ৮ দিন পর
এদিকে উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ ও বোমাবাজিতে দুই তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে বোমার আঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মহম্মদ হালিমের। জখম হন আরো ৩ জন। পরে মারা যান মুক্তার নামের আরো একজন। নিহতদের পরিবারের অভিযোগ, বিজেপি লোকেরাই বোমা মেরে তাদেরকে খুন করেছে। অন্যদিকে সোমবার রাতে পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে খুন হন জয়দেব রায় নামে আরো এক তৃণমূল কর্মী। তাকে বাঁচাতে আহত হন আরো ৩ তৃণমূল কর্মী। তৃণমূলের অভিযোগ বিজেপি দুষ্কৃতরাই জয়দেবকে খুন করেছে। যদিও বিজেপির দাবি, পারিবারিক বিবাদে তিনি খুন হয়েছেন।
এদিকে চিকিৎসার গাফিলতিতে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে কলকাতার এনআরএস হাসপাতাল। রোগীর আত্মীয়দের মারধরে গুরুতর জখম হন এক জুনিয়র চিকিৎসক। প্রতিবাদে রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতি পালন করা হয়।