খবর৭১ঃ বাজার থেকে নমুনা পরীক্ষা করে আরো ২২টি পণ্য মানহীন বলে প্রমাণ পেয়েছে মান নিয়ন্ত্রণে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই। এর মধ্যে ওষুধ ব্যবসায় শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান স্কয়ারের পণ্যও রয়েছে। ভোগ্যপণ্যের বাজারে প্রভাব বিস্তারকারী প্রাণের আরো পণ্য নিম্নমানের বলে প্রমাণ মিলেছে।
এসব পণ্য আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বাজার থেকে তুলে নিতে কোম্পানিগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার এই নির্দেশ এসেছে।
সরকারি সংস্থাটির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, খোলা বাজার থেকে সংগ্রহ করা ৪০৬টি পণ্যের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় অবশিষ্ট ৯৩টি পণ্যের মান পরীক্ষা করে ২২টি ব্র্যান্ডের পণ্যকে ‘নিম্ন মানের’ বলে প্রমাণ মিলেছে।
যেসব পণ্য বাজার থেকে তুলতে হবে তার মধ্যে আছে প্রাণ ডেইরির প্রাণ প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের ঘি, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের রাঁধুনী ব্র্যান্ডের ধনিয়া গুঁড়া ও জিয়ার গুঁড়া, হাসেম ফুডসের কুলসন ব্র্যান্ডের লাচ্ছা সেমাই, চট্টগ্রামের কনফিডেন্স সল্টের কনফিডেন্স ব্র্যান্ডের এবং এ সল্টের মুসকান ব্র্যান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ।
বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয় পর্যায়ের নয়। এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের যমুনা কেমিক্যাল ওয়ার্কসের এ-৭ ব্র্যান্ডের ঘি, চট্টগ্রামের কুইন কাউ ফুড প্রোডাক্টসের গ্রিন মাউন্টেন ব্র্যান্ডের বাটার অয়েল, ঝালকাঠির জে কে ফুড প্রোডাক্টের মদিনা ব্র্যান্ডের লাচ্ছা সেমাই, চাঁদপুরের বিসমিল্লাহ সল্ট ফ্যাক্টরির উট ব্র্যান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ এবং চাঁদপুরের জনতা সল্ট মিলসের নজরুল ব্র্যান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ।
এসব পণ্যের লাইসেন্স স্থগিত করেছে বিএসটিআই। আর থ্রি স্টার ফ্লাওয়ার মিলের থ্রি স্টার ব্র্যান্ডের হলুদের গুঁড়া এবং এগ্রো অর্গানিকের খুশবু ব্র্যান্ডের ঘি নিম্নমানের হওয়ায় কোম্পানি দুটির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
আরও আটটি প্রতিষ্ঠান বিএসটিআইয়ের কোনো লাইসেন্স ছাড়াই পণ্য বাজারজাত করছিল। তাদের নাম প্রকাশ না করে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিয়োমিত মামলা করা হয়েছে।
এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য পাঠানো হয়নি। যোগাযোগ করা হলেও একাধিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
গত রোজার আগে বাজার থেকে ৪০৬টি পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে মান পরীক্ষা করে বিএসটিআই। গত ১ মে প্রথম ধাপে ৩১৩টি পণ্যের মান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে তারা। সেখানে ৫২টি ব্র্যান্ডের পণ্যকে নিম্নমানের বলে ঘোষণা করা হয়। গত ১২ মে ১৮টি প্রতিষ্ঠানের এসব পণ্য বাজার থেকে তোলার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
এর মধ্যেও ছিল প্রাণ, এসিআই, ফ্রেস ও ড্যানিসের মসলা, প্রাণ ও ওয়েল ফুডের লাচ্ছা সেমাই, এসিআই ও মোল্লা সল্টের লবণ, বাংলাদেশ এডিবল অয়েল ও সিটি অয়েল মিলের রূপচাঁদা ও তীর সরিষার তেল ইত্যাদি।
পরে বিএসটিআই এসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করে। পরে অবশ্য একাধিক প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স ফিরিয়ে দেওয়া হয়। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ অবশ্য এদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে। সেই মামলার মীমাংসা হওয়ার আগেই নতুন করে ২২টি পণ্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাল বিএসটিআই।
বিএসটিআইয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পণ্যগুলোর মানোন্নয়ন করে পুনঃঅনুমোদন ব্যতিরেকে সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারী, সরবরাহকারী, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের পণ্য বিক্রি-বিতরণ ও বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচার হতে বিরত থাকার জন্য এবং সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারীগণকে বিক্রিত মালামাল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ প্রদান করা হল।’