খবর৭১ঃ ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতকে বোরকা পরে পুড়িয়ে হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই এ ধরনের আরেকটি ঘটনা ঘটেছে রাজবাড়ীতে। সদর উপজেলার পাচুরিয়া ইউনিয়নের খোলাবাড়িয়া গ্রামে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে গায়ে কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শনিবার সকালে রাজবাড়ী সদর থানায় স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে তার এলাকার স্বামী প্রবাসী শিল্পী বেগম নামের এক মহিলাসহ অজ্ঞাত চার ব্যক্তির নামে মামলা করেছেন।
দগ্ধ কিশোরী খানখানাপুর তমিজউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার পাচুরিয়া ইউনিয়নের খোলাবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্কুলছাত্রীর মা নাসিমা বেগম বলেন, ঈদের দিন (বুধবার) স্থানীয় প্রতিবেশী শিল্পী বেগম আমার মেয়ের কাছে অন্য ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ও আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। কিন্তু আমার মেয়ে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বাড়িতে দুই বোন জাম খাচ্ছিল। আমি তখন ঘরে ঘুমাচ্ছিলাম। আমার ছোট মেয়ের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। পরে সে জানায় বোরকা পরা দুজন বড় মেয়েকে তুলে নিয়েছে। তখন আমিও চিৎকার করতে থাকি। এতে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে বাড়ির পাশের পাটক্ষেত থেকে আমার মেয়েকে উদ্ধার করে। তাকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে জানাজানি হয়ে যাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।
স্কুলছাত্রীর বড় ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলেন, এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে আমি নিরাপত্তাহীনতা থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করি । কিছুক্ষণ পর রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার মজুমদার পুলিশ পাঠিয়ে থানায় ডেকে নিয়ে বিস্তারিত জেনে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন।
ওই স্কুলছাত্রী বলে, পাশের গ্রামের রাজু নামে একটি ছেলে আমাকে পছন্দ করতো। এ পছন্দের কথা স্থানীয় বাসিন্দা শিল্পী বেগম জানতেন। আর এটাকে কেন্দ্র করেই তিনি দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমি বিষয়টি পরিবারকে জানালে সে আক্রোশে ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে আমার গায়ে আগুন দেয়ার চেষ্টা করা হয়।
পাশের বাড়ির বাসিন্দা সাথী সরকার জানান, চিৎকার চেচামেচিতে আমরাও এগিয়ে গিয়ে স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করি। তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এছাড়া গায়ের জামা কাপড় ছেঁড়া ছিল।
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি জানান, এ ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে। স্পর্শকাতর এ বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দুটি টিম মাঠে কাজ করছে এবং আসামি ধরার চেষ্টা চলছে।