খবর৭১ঃ বাংলাদেশে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হলেও সেটা নিয়ন্ত্রণ হতো ইউক্রেন থেকে। আর এ জন্য মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে বুথের ভেতরে কার্ড প্রবেশ করিয়ে টাকা তোলা হতো। ফোনে ইউক্রেনে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতো এই জালিয়াতি চক্রের সদস্যরা।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন।
তিনি বলেন, এই চক্রের সদস্যরা কোনো এটিএম বুথে প্রবেশ করে সেই বুথের সঙ্গে মূল সার্ভারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এরপর তারা নিজস্ব সংযোগ ব্যবস্থা চালু করে। এসময় মোবাইলে যোগাযোগ স্থাপন করে কার্ড ভেতরে ঢোকালেই বুথ থেকে টাকা বের হয়ে আসে। এ কাজে তারা আন্তর্জাতিক রোমিং সিম ব্যবহার করতেন বলে জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।
গত ৩১ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে দুই বিদেশি নাগরিক রাজধানীর বাড্ডায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একটি এটিএম বুথ থেকে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এই টাকা সরিয়ে নেওয়া হলেও এতে কোনো গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হননি। এমনকি ব্যাংকের সিস্টেমেও টাকা তোলার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
পরদিন খিলগাঁও তালতলা মার্কেটের সামনে ডাচ-বাংলার আরেকটি বুথ থেকে টাকা তোলার সময় এক বিদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পান্থপথের একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয় আরও পাঁচ বিদেশিকে।
তারা হলেন- শেভচুক আলেগ (৪৬), ভালোদিমির ত্রিশেনস্কি (৩৭), ভালেনতিন সোকোলোভস্কি (৩৭), সের্গেই উইক্রাইনেৎস (৩৩), দেনিস ভিতোমস্কি (২০), নাজারি ভজনোক (১৯)।
বিদেশি চক্রটির সঙ্গে বাংলাদেশের কেউ জড়িত আছেন কিনা জানতে চাইলে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, বাংলাদেশের কেউ জড়িত নেই এটা বলা যাবে না। জড়িত থাকার বিষয়টি সন্দেহের মধ্যে রয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন জানান, গ্রেফতারদের কাছে থেকে যে ৫০টি কার্ড পাওয়া গেছে তার মধ্যে ইসরাইলের কার্ডও রয়েছে। একজন ইউক্রেনীয় নাগরিক হয়ে কেন তারা ইসরায়েলি ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করতেন তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে এই চক্রের সদস্যদের ভারতে যাওয়ার কথা ছিল বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, আটদিনের টুরিস্ট ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে ইউক্রেনের এই নাগরিকরা। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তুর্কি এয়ারওয়েজের একটি বিমানে করে ইউক্রেন থেকে ইস্তাম্বুল হয়ে বাংলাদেশে আসেন তারা।